১৩ মার্চ ২০২৩, ১০:১২

ভ্যান চালিয়ে পড়িয়েছেন ছেলেকে, সেই এমরান চান্স পেলেন মেডিকেলে

মো. এমরান হোসেন  © সংগৃহীত

মেডিকেলে ভর্তি পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লক্ষ্মীপুরের ছেলে মো. এমরান হোসেন। তার বাবা ইউছুফ একটি ডিস্ট্রিবিউটর কোম্পানির ভ্যান চালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ওই পরিবারে এখন খুশির জোয়ার বইছে। মেডিকেলে ভর্তির জন্য কোন কোচিং বা কারো কাছে প্রাইভেট না পড়েই সম্পূর্ণ নিজের মেধা ও প্রজ্ঞায় মেডিকেলে পড়ার চান্স পেয়েছেন এমরান। সারাদেশে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেডিকেলে ভর্তি পরিক্ষায় ৪৭৯তম স্থান অর্জন করেন তিনি। 

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের মিয়াপাড়া এলাকায় এমরান হোসেনের বাড়ি। তিনি পরিবারের দ্বিতীয় সন্তান। বিজ্ঞান বিভাগে হাজিরহাট মিল্লাত একাডেমি থেকে এসএসসি ও লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন এমরান। এলাকায় তারা খুবই সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। পরিবারে সে একমাত্র ছেলে। তার আরও ৪ বোন রয়েছে। তাদের পরিবারে খুব অস্বচ্ছতা বিরাজ করছে।

এমরানের বাবা মো. ইউসুফ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা দিতে বুধবার (৮ মার্চ) প্রথমবারের মতো ঢাকায় গিয়ে এক আত্মীয়ের কাছে ওঠেন এমরান হোসেন। শুক্রবার (১০ মার্চ) পরীক্ষা দিয়ে ওই আত্মীয়ের সঙ্গেই ঢাকায় ছিলেন। রোববার (১২ মার্চ) মেডিকেলে ভর্তির ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে তিনি ৪৭৯তম স্থান অর্জন করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।

স্থানীয় স্কুল শিক্ষক মো. ইফতেখার মাহমুদ বলেন, এমরান খুবই মেধাবী একজন শিক্ষার্থী। সে মেডিকেলে ভর্তির জন্য কোন কোচিং অথবা কারো কাছে প্রাইভেট পড়েনি। সম্পূর্ণ নিজের মেধা ও প্রজ্ঞায় এমরান মেডিকেলে পড়ার চান্স পেয়েছে। তার বাবা  একজন ভ্যানচালক।

আরও পড়ুন: মেডিকেলে প্রথম হওয়া রাফসানের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই

লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফিরোজ আলম বলেন, এবার আমাদের কলেজ থেকে পাঁচজন মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। এরমধ্যে এমরান একজন। ছেলেটি খুব মেধাবী। তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।

তিনি আরও বলেন, ‘আমার সঙ্গে প্রথম ছেলেটিকে আমাদের কলেজের লাইব্রেরিয়ান সাজ্জাদুর রহমান পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। ২-৩ মাস সে আমার কাছে ক্লাসের বাইরে পড়েছিল। প্রতিদিন বাড়ি থেকে কলেজ আসতে তার প্রায় ১০০ টাকার মতো খরচ হতো। এ খরচ বহন করা তার জন্য কষ্টসাধ্য ছিল।

এজন্য আমার কাছে আর পড়তে আসেনি। ক্লাসেও নিয়মিত উপস্থিত থাকতে পারতো না। তবে সবগুলো পরীক্ষায় সে ভালো ফলাফল করতো। সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় সে আজ সফল।’