গুলিস্তান বিস্ফোরণ: নতুন বউ বাড়িতে আনার আগেই লাশ হলেন রবিন

নিহত রবিন হোসেন শান্ত
নিহত রবিন হোসেন শান্ত  © সংগৃহীত

পাঁচ মাস আগে বিয়ে করেছিলেন রাজধানীর সিদ্দিক বাজারে একটি সিরামিকের দোকানে কাজ করা রবিন হোসেন শান্ত। অভাবের সংসারে অনুষ্ঠান করে বাড়িতে বউ আনতে পারেননি। কথা ছিল রমজানে বেতন বাড়লে কোরবানির ঈদের পর অনুষ্ঠান করে বাড়িতে বউ তোলা হবে। কিন্তু নতুন বউ বাড়িতে আনার আগেই লাশ হয়ে ফিরলেন শান্ত।

মঙ্গলবার গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত হন রবিন হোসেন শান্ত। বুধবার (৮ মার্চ) রাতে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার পূর্ব নাগেরপাড়া গ্রামে দাফন করা হয়।     

নিহত রবিন হোসেন শান্তর বাবা সোহরাব সরদার বলেন, ‘আমরা বুড়া-বুড়ি কখন যে মরে যাই তা কি বলতে পারি। তাই ছেলের বউ দেখব বলে পাঁচ মাস আগে তাকে বিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু অভাবের সংসারে অনুষ্ঠান করতে পারিনি।

তিনি বলেন, আশা ছিল, কোরবানির ঈদের পর গ্রামের মুরব্বিদের নিয়ে লাল শাড়ি পরাইয়া বউ আনব। কিন্তু তা আর হলো না। নতুন বউ আইলো স্বামীরে দাফন করতে।’

আরও পড়ুন: অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শেষ হলো মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা।

সোহরাব সরদার আরও বলেন, একটা মাত্র ছেলে ছিল আমার। অনেক কষ্টে ছেলেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করিয়েছিলাম। দুই বছর আগে আমার ব্রেইন স্ট্রোক হয়। পরে সে পড়াশোনা ছেড়ে রাজধানীর সিদ্দিক বাজারে একটি সিরামিকের দোকানে কাজ শুরু করে। তার সাত হাজার টাকা বেতনের চাকরিতে আমাদের সংসার চলছিল। ওর টাকায় আমাদের ওষুধ কিনতে হতো। এখন কে আমাকে ওষুধ কিনে দেবে? কে আমাদের মুখে খাবার দেবে?

মঙ্গলবার গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে ধসে পড়া ভবন থেকে প্রথমে দোকান মালিক মমিন উদ্দিন সুমনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার আধাঘণ্টা পর কর্মচারী রবিন হোসেন শান্তর মরদেহ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। আত্মীয় শাহাদাত হোসেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শান্তর মরদেহ শনাক্ত করেন।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (৭ মার্চ) গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজারে বিআরটিসি বাসস্ট্যান্ড কাউন্টারের পাশে একটি ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে প্রথম বিস্ফোরণের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এর সাত মিনিটের মাথায় ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ছাড়াও সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ, সিটিটিসি, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ