০৭ মার্চ ২০২৩, ২০:৫০

মায়ের ইফতার আনতে গিয়ে বিস্ফোরণে প্রাণ গেল প্রবাসী সুমনের

সুমনের মৃত্যুতে ঢাকা মেডিকেলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন বোন সোমা  © সংগৃহীত

রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে একটি ভবনে বিস্ফোরণের সময় ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন সদ্য বিদেশ ফেরত সুমন। বাসা থেকে বের হয়েছিলেন মায়ের জন্য ইফতারি কিনতে। বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনিও প্রাণ হারিয়েছেন। মঙ্গলবার (৭ মার্চ) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুমন মারা যান।

গুলিস্তানে বিস্ফোরণের ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৫ জনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এসেছে। এদের মধ্যে একটি লাশ কাতার প্রবাসী সুমনের।

সন্ধ্যায় সুমনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

সেখানে সুমনের বড় বোন সোমা আক্তার চিৎকার করে বলছিলেন, তাদের মা রোজা ছিলেন। তাই মায়ের জন্য সুমন ইফতার আনতে বের হয়েছিলেন। সে বিয়ে করতে দেশে এসেছিল। আমরা গতকাল মেয়ের বাড়িতে গিয়েছিলাম। দয়া করে তাকে ফিরায়ে দিন।

সুমনের মা সালমা জানান, সুমন ১০ দিন আগে চার মাসের ছুটিতে কাতার থেকে বাংলাদেশে আসেন। বিকেলে ইফতার আনার জন্য গুলিস্তান এলাকায় যায় সে। এ সময় বিস্ফোরণ ঘটলে সুমন গুরুতর আহত হন। পরে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুমন মারা যান।

আরও পড়ুন: ক্ষণে ক্ষণে বাড়ছে লাশ, স্বজনদের আহাজারি-আর্তনাদে ভারি ঢামেক

ঢাকা মেডিকেলের সামনে কথা বলছিলেন প্রবাসী সুমনের ভাড়া বাড়ির মালিক হাবিবুর রহমান হাবিব। তিনি বলেন, সুমনের পরিবার আমার বাসায় ভাড়া থাকে। সে ১৫ দিন হলো কাতার থেকে দেশে ফিরেছে। দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ আগেই সুমনের সঙ্গে আমার কথা হয়। সে বলল, তার মায়ের জন্য ইফতারি আনতে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই বিকট শব্দে দুর্ঘটনা ঘটে। এরপর খোঁজ নিতে আমরা ঢাকা মেডিকেলে আসি। এসে দেখি সে মারা গেছে। তার বাবা-মার একটাই দাবি, তাদের ছেলের যেন ময়নাতদন্ত না করা হয়। মৃত্যুর খবর শুনে নিহত সুমনের মা-বোন ঢাকা মেডিকেলে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন।

এর আগে মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে গুলিস্তানে ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপর হতাহতদের দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে আনা আহতদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগ সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আহত মানুষদের নিয়ে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স ভেতরে প্রবেশ করছে। জরুরি বিভাগের সামনে থেকে শুরু করে বাইরের সড়ক পর্যন্ত আহত এবং নিহতদের স্বজনদের আহাজারি চলছে। ডাক্তার ও নার্স থেকে শুরু করে হাসপাতালের কর্মীরা হতাহতদের সেবা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।