০৬ মার্চ ২০২৩, ২২:১৫

পাট দিবসে সরকারি ব্যানারের পাতার ছবি নিয়ে বিভ্রান্তি

প্রচারপত্রের পাতাটির সাথে পাট পাতার কোনো সদৃশ্য না থাকায় দেখা দিয়েছে বিভ্রান্তি   © সংগৃহীত

জাতীয় পাট দিবসের প্রচারণায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্রচারে যে পাতার ছবি দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে বিভ্রান্তি দেখা গেছে জনসাধারণের মাঝে। তবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এটি ‘এক ধরনের পাট পাতা’। তাদের এ দাবি মানতে নারাজ উদ্ভিদ বিজ্ঞানের গবেষকরা। সোমবার (৬ মার্চ) ছিল জাতীয় পাটি দিবস। এ দিবস উদযাপনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে প্রচারপত্র টাঙিয়েছে মন্ত্রণালয়।

রাজধানীর বিজয় সরণী মোড়ে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সৌজন্যে ফেস্টুন চোখে পড়ে। তাতে পাটজাত পণ্যের সঙ্গে রয়েছে সবুজ পাতার ছবি। সেখানে খাঁজ কাটা সবুজ পাতা দেখে পথচারীদের অনেকেই এটা পাট পাতা কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। কয়েকজন পথচারী মন্তব্য করেন, এটা পাটের পাতা না কি গাঁজা গাছের পাতা?

এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও প্লান্ট টেক্সনমিস্ট ড. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন প্রচারপত্রে দেওয়া পাতা দেখে জানান, এটা পাট পাতা নয়। এটা ভিন্ন জাতীয় কোনো উদ্ভিদের পাতা। পাটের পাতা সরল ও একক; আঙ্গুলের মতো এমন ছেঁড়া ছেঁড়া নয়। এ দুই ধরনের পাটের পাতার কোনোটাই এ ছবিতে ব্যবহার করা হয়নি বলেও জানান তিনি।

অধ্যাপক ড. জসীম জানান, দেশে প্রধানত দুটি প্রজাতির পাটের চাষ হয়। এর মধ্যে একটির পাতা মিষ্টি, আরেকটার পাতা তিতা। সাধারণ মানুষের কাছে দেশি ও তোষা এই দুই ধরনের পাট পরিচিত। পাট নিয়ে নানা গবেষণা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, পাট ছাড়া অন্যান্য প্রজাতির উদ্ভিদ থেকেও তন্তু পাওয়া যায়। তবে তা পাট নয়।

পাটের জিন বিন্যাস আবিষ্কারের সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. হাসিনা খান জানিয়েছেন, এটা কোনোভাবেই পাট পাতা নয়। ছবিতে ব্যবহৃত পাতাটি ‘কেনাফ’ এর হতে পারে। এটাও এ ধরনের আঁশ তৈরি করে। তবে এটা পাট পাতা নয়। তিনি বলেন, পাট দিবসের মতো অনুষ্ঠানে এই ছবি ব্যবহার কোনোভাবেই ঠিক হয়নি।

এ নিয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। একইসাথে পাটকল করপোরেশন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল করপোরেশনের কর্মকর্তার এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।