শিক্ষক আন্দোলনের ৯ দিন, খোঁজ নেয়নি কেউ
এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের দাবিতে টানা নয়দিন ধরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। এই সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে কেউ তাদের সাথে যোগাযোগ করেননি বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরতরা।
শনিবার (৪ মার্চ) নবম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান শুরু করেন তারা।
জানা গেছে, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোট নামের একটি মোর্চার ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করছেন। দল-মত নির্বিশেষে সরকারিকরণ প্রত্যাশী সব শিক্ষক অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। আন্দোলনের ৯ দিন হলেও সরকারি কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় অথবা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কোনো কর্মকর্তা আন্দোলনস্থলে আসেননি। এ নিয়ে শিক্ষকদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
শিক্ষক নেতারা বলছেন, ২০১৮ সালে এমপিওভুক্ত শিক্ষা সরকারিকরণের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ২০ দিন অবস্থান ও অনশন কর্মসূচির পর সরকার তিনজন সচিব পাঠিয়ে শিক্ষকদের অনশন ভাঙায়। তখন সরকারি ৫ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ও ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতার আশ্বাস দিয়েছিলো যা বাস্তবায়ন হয়েছে। আমরা আশ্বস্ত ছিলাম বঙ্গবন্ধু কন্যার সরকার পরবর্তী মেয়াদে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ করবেন। আমাদের বিশ্বাস ছিলো মুজিব বর্ষে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারিকরণের মাধ্যমে বৈষম্যের অবসান হবে। বৈষম্য নিরসনের দাবিতে বারবার বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত সরকারিকরণের দাবি পূরণ না হওয়ায় এখন ২০১৮ সালের মতো লাগাতার কর্মসূচির বিকল্প নেই।
তারা বলছেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষাকে সরকারিকরণ করলে বেশি লাভবান হবে সরকার ও শিক্ষার্থী। বৈষম্যহীনভাবে শিক্ষার্থীরা একই মানের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বল্প খরচে পড়ালেখা করবে এই কৃতিত্বের অধিকারী হবে বর্তমান সরকার। সরকার উপজেলা পর্যায়ে একটি করে স্কুল ও কলেজ সরকারিকরণ করায় শহর ও নগরে স্বচ্ছল শিক্ষার্থীরা স্বল্প খরচে পড়ালেখা করছে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের সন্তানরা বেশি খরচে পড়ালেখা করছে। প্রধানমন্ত্রী গত নির্বাচনের আগে বলেছিলেন, গ্রাম হবে শহর। গ্রামকে শহরে পরিণত করতে গেলে প্রথমেই গ্রামের মানুষকে শিক্ষিত করে তুলতে হবে, যার একমাত্র উপায় হলো এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারিকরণ করা। সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাচ্ছে। স্মার্ট দেশ গড়তে এদেশের সব শ্রেণি পেশার মানুষকে আলোকিত শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে এবং মেধাবীদের শিক্ষকতায় আকৃষ্ট করতে হবে। তাই এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারিকরণ ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন কোনো অবস্থাতেই সম্ভব নয়।
মহাজোটের আহ্বায়ক মো. মাঈন উদ্দিন ও সদস্য সচিব মো. জসিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের দাবি একটাই, এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে বলেও জানান তিনি।