অবসরের পর যেখানে থাকবেন, যেসব সুবিধা পাবেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ
টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন শেষে আগামী এপ্রিলে বঙ্গভবন ছাড়বেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তাঁর বিদায়ের দিনগণনা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যেই দেশের পরবর্তী (২২তম) রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন মো. সাহাবুদ্দিন।
আগামী ২৪ এপ্রিল থেকে নতুন রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করার কথা। আর ২৩ এপ্রিল বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হবে। ফলে, স্বাভাবিকভাবেই বঙ্গভবন ছাড়বেন আবদুল হামিদ। বঙ্গভবন ছাড়ার পর তিনি রাজধানীতে কোথায় গিয়ে উঠবেন, সে আলোচনা-প্রস্তুতিও চলছে।
জানা যায়, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ আবদুল হামিদ একসময় লালমাটিয়ার বাসায় থাকতেন। তবে রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষে রাজধানীর নিকুঞ্জের একটি বাসায় উঠবেন বলে গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতির আবদুল হামিদের প্রেস সেক্রেটারি মো. জয়নাল আবেদীন। তবে রাষ্ট্রপতির পারিবারিক দুটি সূত্র জানিয়েছে, মো. আবদুল হামিদের জন্য ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় অবস্থিত একটি ফ্ল্যাটও প্রস্তুত রাখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চান নতুন রাষ্ট্রপতি
অবসরের পরও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাবেন রাষ্ট্রপতির আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতির অবসর ভাতা, আনুতোষিক ও অন্যান্য সুবিধা আইনের তথ্য বলছে, কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি পদে কমপক্ষে ছয় মাস দায়িত্ব পালন শেষে পদত্যাগ করলে অথবা মেয়াদ শেষ হলে মৃত্যুর আগপর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে সর্বশেষ যে মাসিক বেতন পেতেন, তার ৭৫ শতাংশ হারে মাসিক অবসর ভাতা পাবেন।
‘দ্য প্রেসিডেন্টস (রেমিউনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) অ্যাক্ট অনুযায়ী বর্তমানে রাষ্ট্রপতির মাসিক বেতন ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এই হিসাবে অবসরের পর আবদুল হামিদ মাসে ৯০ হাজার টাকা অবসর ভাতা পাবেন।
আইনানুযায়ী অবসরে যাওয়ার পর সাবেক রাষ্ট্রপতি হিসেবে অন্য কিছু সুবিধাও পাবেন মো. আবদুল হামিদ। তিনি একজন ব্যক্তিগত সহকারী ও একজন অ্যাটেনডেন্ট (সাহায্যকারী) পাবেন। দাপ্তরিক ব্যয়ও পাবেন, যার মোট বার্ষিক পরিমাণ সময়ে সময়ে সরকার নির্ধারণ করবে।
আরও পড়ুন: শপথের পর যেসব সুবিধা পাবেন নতুন রাষ্ট্রপতি
একজন মন্ত্রীর প্রাপ্য চিকিৎসাসুবিধার সমপরিমাণ চিকিৎসাসুবিধাদি পাবেন সাবেক রাষ্ট্রপতি। সরকারি অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য বিনা মূল্যে সরকারি যানবাহন ব্যবহার, আবাসস্থলে একটি টেলিফোন সংযোগ পাবেন এবং সরকার সময়ে সময়ে নির্ধারিত সীমা পর্যন্ত এর বিল পরিশোধ থেকে অব্যাহতি দেবে। সাবেক রাষ্ট্রপতি হিসেবে একটি কূটনৈতিক পাসপোর্টও পাবেন মো. আবদুল হামিদ। তখন তিনি দেশের ভেতর ভ্রমণকালে সরকারি সার্কিট হাউস বা রেস্টহাউসে বিনা ভাড়ায় অবস্থানের সুবিধা পাবেন।
প্রসঙ্গত, বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন কাটিয়ে আসা কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কামালপুর গ্রামের সন্তান মো. আবদুল হামিদ প্রথম দফায় ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন। এরপর ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের মতো ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন তিনি। আগামী ২৩ এপ্রিল তাঁর রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
রাজনীতিক আবদুল হামিদ ১৯৭০ সালে ময়মনসিংহ-১৮ আসন থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর আর তাঁকে পেছনে তাকাতে হয়নি। কিশোরগঞ্জের হাওর এলাকা থেকে সাতবার আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। একজন সফল রাজনীতিবিদ হিসেবে রাষ্ট্রের এক নম্বর ব্যক্তি হয়ে বঙ্গভবন ছাড়ছেন তিনি।