প্রশিক্ষণ দিলেই যুবকরা উন্নতমানের কাজ করতে পারে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থার সঙ্গে তাল মেলাতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য নতুন নতুন পণ্য উৎপাদন ও বাজার খুঁজে বের করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। একই সাথে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের যুব সমাজ অত্যন্ত দক্ষ। তাদেরকে একটু প্রশিক্ষণ দিলেই তারা উন্নতমানের কাজ করতে পারে।
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতীয় বস্ত্র দিবস-২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী দেশের ছয়টি জেলায় নতুন ছয়টি টেক্সটাইল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আমাদের পুরনো ঐতিহ্যের সাথে নতুন চিন্তাধারার সম্মিলন ঘটানোরও আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা পোশাক এবং তা রপ্তানি নিয়ে কাজ করছেন তাদের নতুন বাজার খুঁজতে হবে। বিভিন্ন দেশের পছন্দ ভিন্ন ভিন্ন হয়। তা মাথায় রেখে নতুন পণ্য তৈরি করতে হবে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বেসরকারি খাতে দেশে একটি ফ্যাশন ডিজাইন বিশ্ববিদ্যালয়ও প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ফ্যাশন ডিজাইন খুব গুরুত্বপূর্ণ। কোন সময়ে কোন রং ও ডিজাইন ব্যবহার হবে, কোনটার চাহিদা বেশি এটা একটা ঘূর্ণায়মান অবস্থা এবং প্রতি নিয়ত পরিবর্তনশীল। তাই এই পরিবর্তনশীলতার সঙ্গে আমাদের তাল মিলিয়ে চলতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের গার্মেন্টস শিল্পের সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট বা রপ্তানিকারক তাদের আমি অনুরোধ করবো আপনাদের নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে। নতুন নতুন পণ্য উৎপাদন করতে হবে। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন পোশাক ব্যবহার হয়ে থাকে সেভাবে আমরা নতুন বাজার খুঁজে বের করতে পারি। আসন্ন ৪র্থ শিল্প বিপ্লবে ডিজিটাল ডিভাইসের ব্যবহার বড় বড় ভূমিকা রাখবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য তাঁর সরকার দেশের জনগণকে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উপযুক্ত করে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছে। দক্ষ কর্মী বাহিনী গড়ে তুলছে।
সরকার প্রধান দ্রুততর সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বস্ত্র অধিদপ্তরে ওয়ান স্টপ সার্ভিস প্রবর্তন করা হয়েছে জানিয়ে বলেন, ই-নথির মাধ্যমে বস্ত্রশিল্পের উদ্যোক্তাদের সব ধরনের সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এর ফলে বস্ত্র ও তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তারা এখন সহজে এবং স্বল্প সময়ে তাদের প্রয়োজনীয় সকল সেবা গ্রহণ করতে পারছেন। পাশাপাশি বস্ত্রখাতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য তাঁর সরকার বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস কর্পোরেশনের (বিটিএমসি) ১৬টি বন্ধ মিল পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ পদ্ধতিতে (পিপিপি) চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
নতুন উদ্বোধন করা ছয়টি টেক্সটাইল ইনষ্টিটিউট হচ্ছে- ‘শেখ রেহানা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, গোপালগঞ্জ’, ‘শহিদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, গৌরনদী, বরিশাল’, ‘শহিদ কামারুজ্জামান টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, মান্দা, নওগাঁ’, ‘বেগম আমিনা মনসুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট, কাজিপুর, সিরাজগঞ্জ’, ‘ভোলা টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট’ এবং ‘শেখ রাসেল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট, মাদারগঞ্জ, জামালপুর।’
অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক), বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ এবং বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী তৈরি পোশাক খাতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ১০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন। বর্তমান সরকারের আমলে তৈরি পোশাক শিল্পের উন্নয়নের ওপর একটি প্রামাণ্য চিত্রও প্রদর্শিত হয় অনুষ্ঠানে।