রাষ্ট্রপতি হতে চান খাইরুল-পার্থ-রাজ্জাক
বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন করতে আগারগাঁও নির্বাচন অফিসের সামনে মানববন্ধন করেছেন তিন ব্যক্তি। তাদের অভিযোগ, রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন করতে তাদেরকে মনোনয়ন ফরম দেওয়া হচ্ছে না। তারা একাধিকবার নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করেও মনোনয়ন ফরম পাননি। তাই তারা রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন করতে আইন প্রক্রিয়ায় লড়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
তারা তিনজন হলেন- খাইরুল ইসলাম দেওয়ান, কবি জগদ্বীশ বড়ূয়া পার্থ ও আব্দুর রাজ্জাক (সরকার)। তবে এখনো তাদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি। গতকাল রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) আগারগাঁও নির্বাচন অফিসের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেছেন এ তিন ব্যক্তি।
মানববন্ধনে খাইরুল ইসলাম দেওয়ান বলেন, রাষ্ট্রপতি পদে আমাকে নির্বাচন করতে না দেওয়া একটি অগণতান্ত্রিক ধারা। আমার ৩৬ বছর বয়স চলছে। আমি অনেক লাইনে লেখাপড়া করেছি। আমি রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, একাউন্টিং, ম্যানেজমেন্ট অনেক সাবজেক্টে লেখাপড়ি করছি। এমনকি ডাক্তারির এনাটমি, ফিজিওলজি এসব বিষয়েও পড়ি। আমাকে ছোট করে দেখার কিছু নেই। রাষ্ট্রপতি পদে লড়তে সুযোগ না দিলে আমরা আইন অনুযায়ী লড়ে যাবো।
খাইরুল ইসলাম দেওয়ান বলেন, আমাদের দাবি হচ্ছে, আমরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন মেনে নেব না। এটা একটি অগণতান্ত্রিক ধারা।
আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমার শেষ তারিখ ১২ ফেব্রুয়ারি। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১৩ ফেব্রুয়ারি। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৪ ফেব্রুয়ারি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু
কবি জগদ্বীশ বড়ূয়া পার্থ নামে অপর মনোনয়ন প্রার্থী বলেন, আমি দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করার জন্য এখানে দাঁড়িয়েছি। এখানে জনগণের মঙ্গল করার কেউ নেই। আমার বাড়ি কক্সবাজার। আমি বাংলাদেশ মঙ্গল পার্টির চেয়ারম্যান। আমি মঙ্গল ধর্মের প্রবর্তক। আমি দেশ ও জাতির মঙ্গল চাই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ১০ কোটি টাকার উপরে কোনো মালিক থাকতে পারবে না। দেশে যতগুলো খাস জমি আছে, এগুলো ভূমিহীনদের বরাদ্দ দিতে হবে। দেশে যতগুলো গার্মেন্টস আছে সেগুলোর লাভের অংশ মালিকরা পাবে অর্ধেক। আর বাকি অর্ধেক শ্রমিকরা বেতনের সঙ্গে পাবে। দেশের মসজিদে যারা ইমাম আছে তাদেরকে তৃতীয় ক্যাটাগরি নির্ধারণ করে ভাতা দিতে হবে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মনোনয়পত্র দেওয়া হয়নি অভিযোগ করে পার্থ বলেন, মনোনয়ন পত্রের জন্য নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়েই আমাকে প্রবেশ করতে দেওয়া হলো না। আমি ২৫ তারিখ থেকে লেগে আছি। কিন্তু মনোনয়ন ফরম নিতে পারছি না। আজকে ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন ভবনের সামনে দাঁড়িয়েছি। আমাদের দাবি, আমরা বিনাপ্রতিদ্বীতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন মানবো না।
এদিকে, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে দুদকের সাবেক কমিশনার এবং সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপপুর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলীয় প্রার্থী হিসেবে তার নাম চূড়ান্ত করেছেন বলে জানিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি।
সংবিধান অনুয়াযী, রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ থেকে ৫ বছরের জন্য পদে অধিষ্ঠিত থাকেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সেই অনুযায়ী, তার ৫ বছরের মেয়াদ ২৩ এপ্রিল শেষ হবে।
রাষ্ট্রপতি পদে লড়তে অপর মনোনয়নপ্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক (সরকার) বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আওয়াল রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। সে রিটার্নিং অফিসার বরাবর গত ৩০ তারিখে একটি চিঠি দিতে এসেছিলাম। কিন্তু তারা আমার চিঠি গ্রহণ করেনি। পরে আমাকে পরামর্শ দেওয়া হলো আমি যেন ডাক যোগে চিঠিটি পাঠাই। আমি তাই করেছি। একই চিঠি আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে পাঠিয়েছি।
তিনি বলেন, চিঠিতে আমাকে ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগের আবেদনের কথা উল্লেখ করেছি। কিন্তু আমি আমাদের নির্বাচন কমিশনারদের দায়িত্ব ও আচরণ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করছি। আমাদের কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে না।