১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৫:৫৮

বাংলাদেশ স্মার্ট, উন্নত ও সমৃদ্ধির জন্য এগিয়ে যাবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  © সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আর কখনো পেছনে ফিরে তাকাবে না; একটি স্মার্ট উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হয়ে ওঠার জন্য এগিয়ে যাবে। ইনশাআল্লাহ, বাংলাদেশ আর কখনো পেছনে ফিরে তাকাবে না, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।

রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাজীপুরের সফিপুরে আনসার ও ভিডিপি একাডেমিতে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির ‘৪৩তম জাতীয় সমাবেশ-২০২৩’-এ প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তির প্রসারের যে পদক্ষেপ নিয়েছি, এতে এই বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। সকলের সম্মিলিত প্রয়াসেই বাংলাদেশ আমরা উন্নত সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলবো। স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবো ইনশাল্লাহ। আজকে শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি, আমরা স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করেছি, আমাদের দেশে মেট্রো রেল চালু হয়েছে, পাতাল রেলও চালু হবে, কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল করে দিচ্ছি, পদ্মা সেতু নিজেদের অর্থায়নে আমরা করেছি। আর এই প্রতিটি স্থাপনার নিরাপত্তার সঙ্গে আনসার বাহিনী বিশেষভাবে জড়িত রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশটা আমরা অনেক রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন করেছি এবং আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে, আমরা আরো সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। বাংলাদেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। অগ্নিসন্ত্রাস ও জ্বালাও পোড়াও যখন বিএনপি জামাত জোট শুরু করেছিল, বাস, ট্রেন, লঞ্চ, গাড়িতে যখন তারা আগুন দিচ্ছিল আনসার বাহিনীর সদস্যরা তখন নিজ নিজ এলাকায় দায়িত্ব পালন করে এই অগ্নিসন্ত্রাস থেকে দেশের মানুষকে মুক্তি দিতে যথেষ্ট সহায়তা করেছে। তাছাড়া জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনেও ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক এবং বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি একাডেমীর ভারপ্রাপ্ত কমানড্যান্ট মো. ফখরুল আলম তাঁকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজের মাধ্যমে আসনার ও ভিডিপি সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। প্রধানমন্ত্রী সালাম গ্রহণ করেন এবং একটি খোলা জীপে করে প্যারেড পরিদর্শন করেন।

এসময় প্রধানমন্ত্রী নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ১৮০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্যের হাতে আটটি ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন পদক তুলে দেন। এরপর তিনি আনসার একাডেমীতে বিভিন্ন স্থাপনার উদ্বোধন করেন এবং আনসার ও ভিডিপি পরিবেশিত বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কোরিওগ্রাফি উপভোগ করেন।

দেশের তৃণমূলের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে তাঁর সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, আমরা বিনে পয়সায় ঘর করে দিচ্ছি এবং তাদের জীবন মান উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, যাতে করে তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। তিনি এ সময় করোনা পরবর্তী রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ ও বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার উল্লেখ করে দেশের প্রতি ইঞ্চি অনাবাদী জমিকে চাষাবাদের আওতায় আনার আহবান পুণর্ব্যক্ত করে গ্রামীণ জনগণকে আনসার ও ভিডিপি’র সদস্যরা সহায়তা করতে পারে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনার অতিমারী এবং পরবর্তী রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক যে মন্দা দেখা দিয়েছে তা থেকে আমাদেরকে মুক্ত রাখতে হবে। এজন্য জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমি আহবান করেছি এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে, যত অনাবাদী জমি আছে সবগুলো আবাদ করতে হবে। সেক্ষেত্রে গ্রামের লোকদের শেখানো, তাদের দিয়ে কাজ, ফসল উৎপাদন ও তা সংরক্ষণের করানোর মত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা কিন্তু আনসার ও আমাদের গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা পালন করতে পারেন। আমি আশাকরি আপনারা তা রাখবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে আনসার বাহিনীর উন্নয়নে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়। আমরা আনসার বাহিনীর জন্য নতুন আইন প্রণয়ন, সীডমানি দিয়ে ট্রাষ্ট ফান্ড প্রতিষ্ঠান,কমব্যাট ড্রেসসহ তাদের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। ১৯৯৮ সালে আনসার বাহিনীকে জাতীয় পতাকা দিয়েছি। নানা সুযোগ-সুবিধা ও চাকরি স্থায়ী করেছি। আনসার বাহিনীর পদোন্নয়ন ও বিদেশে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আনসার সদস্যরা মাসিক যে ভাতা পান, তা বাড়ানো হয়েছে। ২৭টি উপজেলায় দৃষ্টিনন্দন অফিস ও আধুনিক সুবিধা সম্পন্ন অফিস নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গরিব আনসার সদস্যদের জন্যও নতুন ঘরের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে, তখনই আনসারদের জন্য সব কিছু করা হয় বলেও এসময় জানান তিনি।