পাঠ্যবইয়ে বঙ্গবন্ধুর শপথ নিয়ে ভুল তথ্য
২০২৩ সালের নতুন পাঠ্যবইয়ে বেশ কিছু ভুল ও তথ্যের অসঙ্গতি দেখা গেছে। এসব বইয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শপথ গ্রহণ, মুক্তযুদ্ধকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে ভুল তথ্য ও অঙ্গতি লক্ষ্য করা গেছে।
বিভিন্ন পাঠ্যবই পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, নবম ও দশম শ্রেণির ‘বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা’ বইয়ের ২০০ নম্বর পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, ‘১২ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রধান বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমের নিকট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।’ এই তথ্যটিও সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শপথ পড়িয়েছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী।
১২ জানুয়ারি ১৯৭২ দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। এর পরদিন অর্থাৎ ১৯৭২ সালের ১৩ জানুয়ারি ঢাকার সব দৈনিক সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় গুরুত্বের সঙ্গে।
সেদিন জাতীয় দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ছিল, ‘বাংলাদেশের সংসদীয় গণতন্ত্রে উত্তরণ: বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী’। প্রধানমন্ত্রীর শপথ অনুষ্ঠানের ছবিসহ প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গতকাল বুধবার (১২ জানুয়ারি) অপরাহ্ণে বঙ্গভবনে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সাথে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের নতুন মন্ত্রিসভার অপর ১১ জন সদস্যও শপথ গ্রহণ করেন। বাংলাদেশের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।’ ছবিতেও বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীকে শপথবাক্য পাঠ করাতে দেখা যায়।
একই শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’-এর ১৬ নম্বর পৃষ্ঠায় ‘পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ ক্যাম্প, পিলখানা ইপিআর ক্যাম্প ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আক্রমণ চালায় ও নৃশংসভাবে গণহত্যা ঘটায়’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে রাজারবাগ পুলিশ ক্যাম্প ও পিলখানা ইপিআর ক্যাম্প। প্রকৃতপক্ষে রাজারবাগে ছিল পুলিশ লাইনস, আর পিলখানায় ছিল ইপিআর সদর দপ্তর। গত বছরের বইয়েও একই ভুল ছিল বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, পাঠ্যবইয়ে ভুলের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা এরইমধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছি। ভুলগুলো যথাযথভাবে চিহ্নিত করে তা সংশোধন করে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।