২১ ডিসেম্বর ২০২২, ২০:০৯

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে প্রতিবন্ধী কোটা না থাকা সংবিধান পরিপন্থী

মানবাধিকার কমিশন  © সংগৃহীত

‘প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, প্রতিবন্ধী হওয়ায় পরীক্ষায় পাস না করানোর অভিযোগ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুষ্ঠু তদন্ত চেয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত কোনো কোটা না থাকার বিষয়টি সংবিধান পরিপন্থী বলে মনে করে সংস্থাটি।

আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অভিযোগের বিষয়টি তদন্তপূর্বক কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণ করতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আহ্বান জানিয়েছেন মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ।

বুধবার (২১ ডিসেম্বর) মানবাধিকার কমিশনের উপ-পরিচালক সুস্মিতা পাইকের সই করা চিঠিতে বলা হয়, ২১ ডিসেম্বর দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয় যে, লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ না পাওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকজন প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রত্যাশী।

তাদের অভিযোগ, শত প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে তারা নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। কিন্তু প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাদের মৌখিক পরীক্ষায় পাস করানো হয়নি। এতে তারা নিরুপায় হয়ে পড়েছেন। গত ২০ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন : প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে নতুন কোটা চালুর দাবি

প্রতিবন্ধী চাকরিপ্রত্যাশীরা দাবি জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে তাদের যেন বিশেষভাবে চাকরি দেওয়া হয়। তা না হলে তারা ২৭ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাব চত্বরে শিক্ষার যাবতীয় সনদ পুড়িয়ে ফেলবেন। স্বাধীনতার এত বছরেও প্রতিবন্ধীদের জন্য কোনো নীতিমালা না হওয়ায়ও তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

গত ১৪ ডিসেম্বর প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হয়। ৩৭ হাজার ৫৭৪ প্রার্থীকে সহকারী শিক্ষক পদে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়। এই নিয়োগে ৬০ শতাংশ নারী কোটা, ২০ শতাংশ পোষ্য কোটা ছিল। তবে প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা ছিল না।

নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে মৌখিক পরীক্ষায় পাস না করিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ থেকে বঞ্চিত করার বিষয়টি বৈষম্যের জন্ম দেয়। যা সংবিধান পরিপন্থী ও মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে মনে করে কমিশন।

এছাড়া প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় নারী, পোষ্য এবং পুরুষ কোটা থাকলেও প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত কোনো কোটা না থাকার বিষয়টিও সংবিধান পরিপন্থী। কারণ তারা সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের মধ্যে অন্যতম।

এমতাবস্থায় অভিযোগের বিষয়টি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও তদন্তপূর্বক আগামী ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণ করতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে অনুরোধ করেন মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান।