ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার পতাকায় ‘স্কুলড্রেস’ পাচ্ছে সাজেদারা
চলতি কাতার বিশ্বকাপ আসরে ইতোমধ্যে বাদ পড়েছে ব্রাজিলের মতো বড় দলগুলো। ভক্ত-সমর্থকদের কাঁদিয়ে বাড়ির পথে দেশগুলো। আবারও বিশ্বকাপের আসর বসবে; আবারও উন্মাদনায় ভাসবে ভক্ত-সমর্থকরা। তবে সে সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে আরও চার বছর। আর খেলা পাগল বাংলাদেশে তাদের প্রিয় দলগুলোকে সমর্থন দিতে নানা রকম ব্যতিক্রমী কাজ করে সমানভাবে আলোচিত হচ্ছে দেশে-বিদেশে। ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ উপলক্ষে প্রিয় দলের পতাকা টানানো যেন খুবই নিয়মিত ও সাধারণ ঘটনা বাংলাদেশে।
বিশ্বকাপ শেষে সে পতাকা কেউ নামিয়ে ফেলে; তবে অধিকাংশ পতাকাই নামানো হয়না। যার ফলে তা রোদ-বৃষ্টির আলিঙ্গনে মলিন হতে থাকে। যদিও উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে নিজ দেশের বা অন্য কোনো দেশের পতাকায় জামা বানানো অতি সাধারণ ঘটনা। যাই হোক না কেন-আমাদের দেশে যেমন পতাকা টানানো সাধারণ ঘটনা, তেমনি সেখানেও পতাকা দিয়ে জামা বানানোও অতি-সাধারণ ঘটনা। তবে, সেখানে তা বিলাসিতা কিংবা উৎসবে হলেও যার কোন জামা নেই তার কাছে পতাকা কিংবা অন্য যাই কিছুই হোক না কেন- তা তো কেবলই এক খণ্ড কাপড় দেশপ্রেমকে ছাপিয়ে। তবে, এবার দেশের তরুণদের উদ্যোগে পতাকায় তৈরি হচ্ছে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের ‘স্কুলড্রেস’। আর ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে দেশের সবচেয়ে বড় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বিদ্যানন্দ’।
বিদ্যানন্দ বলছে, পতাকা থেকে আমরা সেলাই খুলে কিংবা কেটে কাপড় উদ্ধার করি। সে কাপড় দিয়ে তৈরিকৃত স্কুল পোশাক দেখে কেউ বুঝবেন না যে এটা পতাকার অংশ। আর বিদেশে পতাকার ডিজাইনে পোশাক তৈরির প্রচলন সাধারণ বিষয় বলেও জানায় সংগঠনটি। তারা বলছে, এতে কেউ কেউ জাতীয় পতাকার অপমান, কাপড়ের কোয়ালিটি কিংবা টাকার অপচয় বললেও অধিকাংশ মানুষই এমন উদ্যোগের প্রশংসা করছে।
আর সাধারণত পরিধেয় সস্তা কাপড়ে পতাকা হয়না, রোদ কিংবা পানিতে বিবর্ণ হয় না এমন কাপড়ে তৈরি হয় পতাকা। তবে যার পরনের কাপড় নেই, তার কি কাপড়ের মান বাছাইয়ের বিলাসিতা থাকে-প্রশ্ন তাদের। তারা বলছেন, উদ্দেশ্য মহৎই কি কাজকে সমর্থনের জন্য যথেষ্ট নয়?
বিদ্যানন্দের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি ছবি শেয়ার করে জানানো হয়েছে, ড্রেস না থাকায় স্কুলে যেতে না পারা সাজেদার বাবা ট্রাকে কুলীর কাজ করতে গিয়ে পড়ে পা ভেঙে ফেলছেন। তাই স্কুলের খরচ মেটাতে পারছেন না। সেখানে স্কুলের পোশাকের আবদার জানায় কিভাবে? সে সাজেদার স্কুল ড্রেস বানানো হয়েছে ব্রাজিলের পতাকায়। আবার সে স্কুলে যাবে, হাসবে তার সহপাঠীর সাথে।
তারা আহ্বান করেছে, কেউ তাদের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগে অংশগ্রহণ করতে চাইলে পতাকা কুরিয়ার করতে পারবেন তাদের। তারা চান শত শত স্কুল ড্রেস বানাতে। সাথে আপনি তাদের সাথে এ উদ্যোগে যুক্ত হতে পারবেন সেলাইয়ের টাকা দিয়েই।