২৯ নভেম্বর ২০২২, ০৯:৫০

দশ মাসে নির্যাতনের শিকার ৩০৬০ নারী, ৫৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠানে নেই অভিযোগ বক্স

সংবাদ সম্মেলন  © সংগৃহীত

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে দেশে তিন হাজার ৬০ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ৫৭ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং কর্মস্থলে নেই নারীদের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে রিপোর্টিংয়ের জন্য কোনো অভিযোগ বক্স। এ ছাড়া নারী ও কন্যাশিশু পাচারের ঘটনা ঘটেছে ৬৬টি।

সোমবার (২৮ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ-২০২২ উদযাপন উপলক্ষ্যে এ তথ্য জানান জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী।

হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এখানে নির্যাতনের যে সংখ্যা প্রকাশ হয়েছে বাস্তব চিত্র আরও খারাপ।

‘কর্মক্ষেত্র এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে হাই কোর্টের নির্দেশিকা বাস্তবায়নে অগ্রগতি’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রতিষ্ঠানগুলোতে যৌন নির্যাতনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সমাধান বিষয়ে কোনো তথ্যও জানা নেই।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন সংস্থাটির নেত্রী দিল সিতারা চুনি, জাকিয়া, নারী শ্রমিক সংগঠনের নেত্রী নাজমা আক্তার, সাউথ ইস্ট ব্যাংকের অফিসার তাছলিমা জাহান প্রমুখ। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদ থেকে এ তথ্য নেওয়া হয়েছে।

বক্তারা বলেন, নারীদের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে ৭১ শতাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমিটি আছে। এ ছাড়া নারীদের ৩৯ শতাংশ কর্মস্থলে এই কমিটি রয়েছে। তবে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নির্দেশিকা মেনে কমিটি গঠন করা হয়নি বেশির ভাগ কর্মক্ষেত্রে।

আরও পড়ুন: সিধলীর এসএসসির ফলাফলে খুশি শিক্ষর্থী-অভিভাবকরা।

অ্যাডভোকেট সালমা আলী বলেন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সবাকেই এগিয়ে আসতে হবে। অভিযোগ করার ক্ষেত্রে নির্যাতিত নারীদের শক্তি ও সাহস জোগাতে হবে। তারা যাতে সহজে ও কোনো রকম হয়রানি ছাড়াই অভিযোগ করতে পারে সেই পরিবেশ সৃষ্টি করা দরকার।

বক্তারা আরও বলেন, শতকরা ১৯ ভাগ প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি গঠনের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে কমিটি আছে সেগুলোর মধ্যে মাত্র ৪৪ শতাংশ কার্যকর আছে।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি বন্ধে মহিলা আইনজীবী সমিতির পক্ষে ৯টি সুপারশ তুলে ধরা হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য সুপারিশগুলো হলো-হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একটি করে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠন ও কার্যকর করা। অভিযোগকারীরা যাতে নির্ভয়ে কমিটির কাছে আসতে পারেন সেজন্য সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া; রিপোর্টি এবং প্রতিক্রিয়া প্রক্রিয়া কার্যকরী করা, কমিটির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি ছোট বাজেট বরাদ্দ রাখা, একটি জবাবদিহিতামূলক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং সাংগঠনিক স্তর থেকে মনিটরিং করা।