১২ অক্টোবর ২০২২, ২২:৩১

৩ শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় ছাত্রলীগের ২০ জনের নামে মামলা

নিহত তিন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী  © ফাইল ছবি

প্রতিপক্ষের ধাওয়ায় ঝিনাইদহ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজের তিন শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল-ইমরানকে প্রধান আসামি করে ২০ জনের নামে আদালতে হত্যা মামলা করা হয়েছে। 

বুধবার (১২ অক্টোবর) নিহত সাইদুর রহমান মুরাদের বাবা বদিউজ্জামান বিশ্বাস বাদশা বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে মামলটি করেন। আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে, ঝিনাইদহ ভেটেরিনারি কলেজে শিক্ষার্থীরা ডিভিএম ডিগ্রির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল। গত ৭ অক্টোবর রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমার ছেলে ভেটেরিনারি কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি মুরাদসহ ৯ জন শহর থেকে কলেজ ক্যাম্পাসে ফিরছিল। পথিমধ্যে চুয়াডাঙ্গা সড়কের জোহান ড্রিম ভ্যালী পার্কের সামনে পৌঁছালে মো. ইকরামুল ইসলাম আমার ছেলে মুরাদসহ সঙ্গে থাকা ৯ জনকে চা খাওয়ার জন্য বলে। সেখান থেকে চা খাওয়ার পর কলেজ ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। কিছু দূর যাওয়ার পর আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন তাদের গতিরোধ করে।

সে সময় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল ইমরানের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মোটরসাইকেলের পেছনে বসে থাকা মুরাদকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২ নং আসামি ছাত্রলীগ নেতা ফাহিম হাসান সনি তার হাতে থাকা রামদা দিয়ে পেছন দিক থেকে কোপ মেরে জখম করে। আসামি মুস্তাকিম আহম্মেদ দা দিয়ে মুরাদের মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করে। সে সময় আসামিদের কাছ থেকে জীবন রক্ষার্থে মোটরসাইকেল নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় আসামিরাও মোটরসাইকেল নিয়ে তাদের ধাওয়া করে। এ সময় আসামিরা মোটরসাইকেল চালক তৌহিদুল ইসলামের হাতে কোপ মারলে ঘটনাস্থলেই তার হাত ছিন্ন হয়ে যায়। তখন তাদের মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ওপর পড়ে যায়। এরপর আসামিরা তাদের কুপিয়ে জখম করে। ঘটনাস্থলেই মুরাদ, তৌহিদুল ইসলাম ও সমরেশ বিশ্বাস মারা যায়।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তরিকুল ইসলাম জানান, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ন্যায়বিচারের স্বার্থে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। আশা করছি আদালতের কাছে ন্যায়বিচার পাব।

নিহত মুরাদের বাবা বদিউজ্জামান বিশ্বাস বাদশা বলেন, আমার প্রতিবন্ধী দুই সন্তানের মধ্যে আশার আলো ছিল মুরাদ। এই ছেলেকে নিয়ে অনেক আশা আর স্বপ্ন ছিল আমার। কিন্তু নষ্ট রাজনীতির কবলে পড়ে নিভে গেছে তার প্রাণপ্রদীপ। এখন আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।

তিনি বলেন, আমার ছেলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে মনেপ্রাণে ধারণ করেই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিল। হঠাৎ করেই আমার ছেলেসহ তিনজনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হবে- এটা ভাবতেই পারিনি। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এই হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার চাই।