কাজী মোতাহার হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী ও সাহিত্যিক কাজী মোতাহার হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৮১ সালের ৯ অক্টোবর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। শিক্ষা-গবেষণা ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, স্বাধীনতা পুরস্কারসহ নানা পুরস্কারে ভূষিত হন।
কাজী মোতাহার হোসেনের জন্ম ১৮৯৭ সালের ৩০ জুলাই কুষ্টিয়ায় মামাবাড়িতে। তার পৈতৃক নিবাস ফরিদপুরের পাংশা থানার বাগমারা গ্রামে।। তার বাবার নাম কাজী গওহর উদ্দীন আহমদ এবং মা তাসিরুন্নেসা।
১৯১৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে তিনি দ্বিতীয় শ্রেণিতে প্রথম হয়ে পদার্থবিজ্ঞানে অনার্সসহ বিএ এবং ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এমএ পাস করেন। পরে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত শাস্ত্রে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ‘পরীক্ষণ প্রকল্প’ শীর্ষক অভিসন্দর্ভের জন্য তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫১ সালে পরিসংখ্যানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
ছাত্রাবস্থায়ই ১৯২১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে ডেমনেস্ট্রেটর হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯২৩ সালে তিনি বিভাগের সহকারী প্রভাষকের পদ লাভ করেন। ১৯৪৮ সালে নিজ উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংখ্যাতত্ত্ব ও তথ্যগণিত বিষয়ে এমএ কোর্স চালু করেন। দেশে সংখ্যাতত্ত্ব পঠন-পাঠনের বিষয়ে তিনি ১৯৫০ সালে 'ডিজাইন অব এক্সপেরিমেন্টস'-এর ওপর গবেষণা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি প্রফেসর পদে উন্নীত হন। ১৯৬১ সালে অবসর গ্রহণ করলেও ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত তিনি পরিসংখ্যান বিভাগের ‘সুপারনিউমারারি প্রফেসর’ হিসেবে বিভাগের সঙ্গে তার কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখেন।
১৯৬৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইমেরিটাস প্রফেসর’ পদে নিযুক্তি লাভ করেন। স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে তিনি ‘জাতীয় অধ্যাপক’ পদে সম্মানিত হন। ১৯২৬ সালে ‘মুসলিম সাহিত্য সমাজ’ প্রতিষ্ঠায় তিনি বিশেষ ভূমিকা রাখেন।
তার উদ্ভাবিত পদ্ধতি 'হোসেইনস চেইন রুল' নামে আজও সারাবিশ্বে সমাদৃত। ১৯৫৫ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের 'ডিন' ছিলেন। ১৯৬৪ সালে সংখ্যাতত্ত্ব বিভাগ থেকে অবসর নেন। ১৯৬৯ সালে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'প্রফেসর ইমেরিটাস' হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৭৫ সালে তাকে জাতীয় অধ্যাপকের মর্যাদা দেওয়া হয়। কাজী মোতাহার হোসেন ১৯২৯ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত অবিভক্ত বাংলা ও পূর্ব পাকিস্তানে দাবায় একক চ্যাম্পিয়ন ছিলেন।