মায়ের বিয়ে দিলেন মেয়েরা
মা নাদিরা বেগমের বিয়ে দিলেন মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস, মারিয়াম জ্বীম ও মেয়ের স্বামী মাহমুদুল ইসলাম। তারা সবাই হাসিমাখা মুখে বলেছেন, ‘আজ মাকে নতুন সংসার দিলাম।’
গত ৩০ সেপ্টেম্বর জান্নাতুল তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, আজ আমরা ২ বোন, আমার স্বামী এবং পরিবারের কয়েকজন সদস্য মিলে হাসিমুখে আমার মায়ের বিয়ে দিয়েছি।
জানা যায়, স্বামী মো. রুহুল আমিনের আত্মহত্যার পর ৫ বছর পার হয়েছে নাদিরা বেগমের (৫৩)। এরপর থেকে ২ মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ও মারিয়াম জ্বীমকে নিয়েই কোনোরকমে সংসার চালিয়েছেন তিনি।
বড় মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের বিয়ের পর ছোট মেয়ে জ্বীমের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় পড়েন মা। পরে বড় বোন ফেরদৌস ছোট বোনকে নিজের কাছে নিয়ে নেন। এরপর একা হয়ে পড়েন জ্বীমের মা।পরে দুই বোন ভেবে-চিন্তে তাদের মাকে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ২ মাস চেষ্টার পর ৩০ সেপ্টেম্বর নাদিরা বেগমের বিয়ে দিয়েছেন মেয়েরা। তারা নতুন বাবা হিসেবে পেয়েছেন ৬২ বছর বয়সী মো. হান্নান খানকে।
জান্নাতুল ফেরদৌসের স্বামী মাহমুদুল ইসলাম শাশুড়ির বিয়েতে উকিল বাবার ভূমিকায় থেকে বিয়েতে সহযোগিতা করেন। বিয়ের পর স্বামীকে নিয়ে নাদিরা বেগম মিরপুরে তার বাসায় রয়েছেন।
মায়ের বিয়ে প্রসঙ্গে মেয়ে জান্নাতুল বলেন, আমার মা সারাজীবন নিজে উপার্জন করেছেন। কারও মুখাপেক্ষী থাকেননি। আমাদের কাছে রাখা হলে মায়ের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হতো। তাই আমি, বোন ও আমার স্বামী সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ২ মাসের মধ্যে মাকে বিয়ে দিলাম।
নাদিরা বেগমের মেয়ের জামাই মাহমুদুল ইসলাম শাশুড়ির বিয়ে প্রসঙ্গে বলেন, মা-বাবা মেয়ের বিয়ে যেভাবে দেন, আমি এবং আমার স্ত্রী সেভাবেই আমার শাশুড়ির বিয়ে দিলাম। আমাদের খুব ভালো লাগছে।নাদিরা বেগমের বর্তমান স্বামী হান্নান খান হানিফ এন্টারপ্রাইজে গাড়ির দেখাশোনা করেন। ৭ বছর আগে তার স্ত্রী মারা গেছেন। তার আগের ঘরের ১ ছেলে ও ১ মেয়ে বিয়ে করে নিজেদের সংসার নিয়ে ব্যস্ত।
নতুন বিয়ে সম্পর্কে হান্নান খান বলেন, খুব কষ্ট করতে হয়েছে স্ত্রী মারা যাওয়ার পর। তাই চিন্তা করছিলাম যে, এই বয়সে আমার ১ জন সঙ্গী দরকার। তারপর এই বিয়ে। আমার ছেলে-মেয়েরা এ নিয়ে আপত্তি করেনি।
নতুন সংসার সম্পর্কে নাদিরা বেগম বলেন, আমার মেয়ে ও তার স্বামী বিয়ের যে আয়োজন করেছে তা বেশ ভালো হয়েছে।