মরিয়মের সঙ্গে দেখা করতে ‘রাজি নন’ মা রহিমা
নিখোঁজের প্রায় এক মাস পর মরিয়ম মান্নানের মা রহিমা বেগমকে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ। মায়ের নিখোঁজের তথ্য জানিয়ে প্রায় এক মাস ধরে তার সন্ধান করছিলেন তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মরিয়মের কান্নার ছবি ছুঁয়ে যায় সবাইকে। উদ্ধার হওয়ার পর রহিমাকে সোনাডাঙায় ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। মরিয়ম মান্নানসহ অন্য সন্তানরা রোববার সকালে সেখানে গেলেও তাদের সঙ্গে কথা বলেননি রহিমা। কোনভাবেই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে রাজি হচ্ছিলেন না তিনি।
গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে ফরিদপুরে বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের একটি ঘর থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকে রাত পৌনে ১১ টায় খুলনার উদ্দেশে রওনা হয় পুলিশ। রাত সোয়া ২ টার দিকে তাকে দৌলতপুর থানায় নিয়ে আসা হয়। ওই রাতেই তাকে রাখা হয় সোনাডাঙায় ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে।
সেখানে রোববার সকালে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে যান মরিয়ম ও তার ভাই বোনরা। তবে কোনভাবেই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে রাজি হচ্ছিলেন না তিনি।
পরে পুলিশের অনুরোধ ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে জানালার কাছে এসে দাঁড়ান রহিমা বেগম। তখন মরিয়ম মা বলে ডাক দিলে তার দিকে কোনভাবেই তাকাইনি, বরং মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে পিছন দিকে হেঁটে চলে যান।
ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার থেকে সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে রহিমা বেগমকে বুঝে নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তাকে জিজ্ঞেসাবাদ শেষে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে একটি ব্রিফ করেন পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘আমরা রহিমাকে আনার পর তেমন কোন কথা তিনি বলেননি। সকালে তিনি তার পরিবারের সঙ্গেও দেখা করতে চান নি। কী কারণে তিনি এমন করছেন কিছু বুঝতে পারছি না।’
আরও পড়ুন: রহিমাকে নিয়ে রহস্য কাটছে না
মরিয়মের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে পুলিশ সুপার বলেন, ‘মরিয়ম বারবার ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। ময়মনসিংহের একটি লাশ নিজের মায়ের বলে দাবি করেছেন। এসব করে আমাদের বিভ্রান্ত করেছেন। এটা তার ঠিক হয়নি।’ রহিমা বেগম আত্মগোপন ছিলেন নাকি তাকে অপহরণ করা হয়েছিল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ‘রহিমা বেগমের কাছে জামাকাপড় ছিল। ওষুধ ছিল। এটাকে অপহরণ বলা যায় না।’
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘আমরা এখন রহিমাকে আদালতে সোপর্দ করবে। আদালত যেখানে রাখার নির্দেশ দেয় রহিমাকে সেখানে রাখা হবে।’
খুলনার দৌলতপুর মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিখোঁজ হন রহিমা। সে সময় রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বিল্লাল হাওলাদার ওই বাড়িতে ছিলেন। পানি আনতে বাসা থেকে নিচে নেমেছিলেন রহিমা।
এ ঘটনায় পরেরদিন অপহরণ মামলা করেন রহিমা বেগমের মেয়ে আদুরী। রহিমা অপহৃত হয়েছেন দাবি করে ১ সেপ্টেম্বর খুলনায় সংবাদ সম্মেলন করেন পরিবারের সদস্যরা।
রহিমার সঙ্গে জমি নিয়ে স্থানীয়দের মামলা চলছে বলেও সে সময় জানানো হয়েছিল। রহিমার করা সেই মামলায় আসামিরা হলেন প্রতিবেশী মঈন উদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, রফিুকল ইসলাম পলাশ, মোহাম্মাদ জুয়েল ও হেলাল শরীফ। বর্তমানে তারাসহ স্বামী বিল্লাল হাওলাদার গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।