রহিমাকে নিয়ে রহস্য কাটছে না

মরিয়ম মান্নানের মা রহিমা বেগমকে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ
মরিয়ম মান্নানের মা রহিমা বেগমকে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ  © সংগৃহীত

নিখোঁজের প্রায় এক মাস পর মরিয়ম মান্নানের মা রহিমা বেগমকে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ। মায়ের নিখোঁজের তথ্য জানিয়ে প্রায় এক মাস ধরে তার সন্ধান করছিলেন তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মরিয়মের কান্নার ছবি ছুঁয়ে যায় সবাইকে। উদ্ধারের পর থেকে পুলিশের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি তিনি। তবে রহিমা বেগমকে উদ্ধারের পর পুলিশ বলছে, স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন রহিমা বেগম। তাকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়েছে। তার অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে তদন্ত সংস্থাটি। 

শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত দুইটার দিকে রহিমা বেগমকে উদ্ধারের পর দৌলতপুর থানায় নিয়ে আসা হয়। রাতে তাকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়। সকালে দেশজুড়ে আলোচিত এই গৃহবধূকে পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) ময়মনসিংহে ১২ দিন আগে উদ্ধার করা এক নারীর মরদেহকে রহিমা বেগমের বলে দাবি করেন তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান। এদিন রাত পৌনে ১২টার দিকে মরিয়ম মান্নান ফেসবুক এক পোস্টে বলেন, ‘আমার মায়ের লাশ পেয়েছি আমি এই মাত্র।’

গত ২৭ আগস্ট রাত ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার বাসার উঠানের নলকূপে পানি আনতে যান রহিমা বেগম। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি। পরদিন তার মেয়ে আদুরী আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণ মামলা করেন। এ মামলায় ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মায়ের সন্ধান চেয়ে ঢাকায় মানববন্ধনসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব ভূমিকা পালন করেন মেয়ে মরিয়ম মান্নান।

ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার ওসি আব্দুল ওহাব শনিবার রাতে সাংবাদিকদের জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করা হয়। তাকে খুলনায় পাঠানো হচ্ছে। পরে পুলিশের একটি দল রাত ২টার দিয়ে রহিমা বেগমকে নিয়ে খুলনার দৌলতপুর থানায় পৌঁছায়।

আরও পড়ুন: মাকে খুজেছি বলে আমাকে আমাকে দোষী করা হবে?

রাতেই খুলনা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে প্রেস ব্রিফিং করা হয়। মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন যে, রহিমা বেগম ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুস মোল্লার বাড়িতে রয়েছেন। আরও খোঁজ নিয়ে তারা বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হন। এরপর দৌলতপুর জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার আবদুর রহমান ও দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল রাত পৌনে ১১টার দিকে ওই বাড়িতে পৌঁছায়। পুলিশ সেখানে গিয়ে দেখতে পায়, রহিমা বেগম ওই বাড়িতে বসে দুজন নারীর সঙ্গে গল্প করছেন। তবে বাড়ির মালিক কুদ্দুস বাড়িতে ছিলেন না।

পুলিশ সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও রহিমা বেগম কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি বলে জানান জাহাঙ্গীর হোসেন।

উপপুলিশ কমিশনার জানান, রহিমা অপহরণ মামলাটির তদন্ত দৌলতপুর থানা-পুলিশের কাছ থেকে পিবিআইতে গেছে। পিবিআই তদন্ত করে পুরো রহস্য উন্মোচন করবে। 


সর্বশেষ সংবাদ