বাড়িতে বাবার মরদেহ রেখে এসএসসি পরীক্ষা দিল সুমাইয়া
বাবার হাত ধরে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়া হলো না তাহমিনার। বাম হাতে চোখ মুছে আর ডান হাতে কলম ধরে আজ শনিবার এসএসসি পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখেই বাংলা পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়েছে।
স্কুল জীবনের প্রতিটি পরীক্ষাতেই বাবার হাত ধরে যেত তাহমিনা। কিন্তু বিধির অমোঘ বিধানে বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখেই কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে যেতে হলো সুমাইয়াকে।
এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামে। সুমাইয়া কনেশতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। আজ শনিবার ছিল তার বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা।
সুমাইয়ার বাবা আবুল কাশেম ছিলেন গাড়ি চালক। তিন বোন দুই ভাইয়ের মধ্যে সুমাইয়া সবার বড়।
কনেশতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, সুমাইয়া ভালো শিক্ষার্থীর পাশাপাশি একজন ভালো সংগঠক। শুক্রবার রাতে সুমাইয়ার বাবা আবুল কাশেম মারা যান। সকালে পরীক্ষা দিবে কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। নিজেকে সামলে নিয়ে বাড়ি থেকে আড়াই কিলোমিটার দূরে চৌয়ারা গালর্স স্কুলের কেন্দ্রে পরীক্ষা দেন।
পরীক্ষা কেন্দ্রে পরিদর্শনে যান কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শুভাশিস ঘোষ। তিনি জানান, আমি যখন জানতে পারি মেয়েটি বাড়িতে বাবার মরদেহ রেখেই পরীক্ষা দিতে আসছে তখন হলে কর্তব্যরত শিক্ষকদের বলেছি মেয়েটি যেন নার্ভাস না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে। পরীক্ষা শেষে যেন সুমাইয়াকে বাড়ি পৌঁছে দেয়া হয়।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে সুমাইয়া বলেন, বাবার স্বপ্ন ছিল আমি যেন শিক্ষক হই। বাবার স্বপ্ন পূরণে বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিতে যাই। আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন। যেন বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পারি।