প্রধান শিক্ষক না থাকায় ব্যহত কার্যক্রম, হচ্ছে না বেতন
বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের মৃত্যুর পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদটি নিয়ে দুই শিক্ষকের ঠেলাঠেলিতে ব্যহত হচ্ছে স্কুল কার্যক্রম, দুই মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ও কর্মচারীরা। ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্চগড় বিষ্ণু প্রসাদ (বিপি) সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে।
জানা যায়, গত ৩০ জুলাই প্রধান শিক্ষকের আকস্মিক মৃত্যুতে অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে জেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের অন্যতম এই সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠনটি। জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদটি নিয়ে দুই শিক্ষকের ঠেলাঠেলিতে বেহাল দশার সম্মুখীন হচ্ছেন বিদ্যালয়টির প্রায় ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী, ৪৫ জন শিক্ষক এবং আট জন কর্মচারী।
বিদ্যালয় সূত্র জানা যায়, গত ৩০ জুলাই প্রধান শিক্ষক মো. মোফাজ্জল হোসেন আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রংপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর শিক্ষকদের মধ্যে জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে দ্বিতীয় জেষ্ঠ্য শিক্ষক জোবায়ের ইসলাম বাদল নিজ উদ্যোগে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পাশের চেয়ারে বসে বিদ্যালয়টি পরিচালনা করছেন।
আরও পড়ুন: ২৩ ডিসেম্বর ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা নিতে চায় এনটিআরসিএ।
প্রধান শিক্ষক মারা যাওয়ার পর দ্বিতীয় জেষ্ঠ্য শিক্ষক জোবায়ের ইসলাম বাদল ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পেতে গত ২২ আগস্ট রংপুর বিভাগীয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালক বরাবরে কাগজপত্র পাঠান। এ নিয়ে তবে তার চেয়ে তিন দিনের জেষ্ঠ্য শিক্ষক মো. ছায়ফুল্লাহর কাছ থেকে একটি অনাপত্তিপত্র নেন তিনি। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদটি অনুমোদন না হওয়ায় আর্থিক সংকটসহ নানা জটিলতায় পরে বিদ্যালয়টি। গত জুলাই এবং আগস্ট মাসের বেতনও পাননি শিক্ষক কর্মচারীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, জেষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে সিনিয়র শিক্ষক মো. ছায়ফুল্লাহ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হওয়ার কথা। কিন্তু দ্বিতীয় জেষ্ঠ্য শিক্ষক মো. জোবায়ের ইসলাম বাদল ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হতে নানাভাবে চেষ্টা তদবির করার কারণে নের্তৃত্ব হয়ে আছে বিদ্যালয়টি।
বিদ্যালয়ের জেষ্ঠ্য শিক্ষক মো. ছায়ফুল্লাহ বলেন, শিক্ষক জোবায়ের ইসলাম বাদলের দুই দিন আগে আমি শিক্ষক হিসেবে যোগদান করি। সেই হিসেবে আমার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হওয়ার কথা। কিন্তু এর মধ্যে তিনি আমার কাছে এসে জানান যে, তার চাকরির আর ৬/৭ মাস আছে। এজন্য তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হতে চান। এরপর আমি তাকে একটি অনাপত্তিপত্রে স্বাক্ষর করে দেই। তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হলে আমার আপত্তি নেই। এ নিয়ে আর কোন মন্তব্যও নেই।
এ প্রসঙ্গে দ্বিতীয় জেষ্ঠ্য শিক্ষক জোবায়ের ইসলাম বাদল বলেন, জেষ্ঠ্য শিক্ষক মো. ছায়ফুল্লাহ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হতে চান না। আমার দায়িত্ব পাওয়া বিষয়ে অনাপত্তি দিয়েছেন। আর্থিক বিষয় ছাড়া সব রকম দায়িত্ব পালন করছি। এর আগেও দীর্ঘদিন আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছিলাম। প্রধান শিক্ষক মারা যাওয়ার পর তার মৃত্যু সনদসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠাতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। আশা করি দুই এক দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
বিদ্যালয়ের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনুমোদনের বিষয়টি রংপুর বিভাগীয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস দেখেন। জরুরিভাবে বিদ্যালয়টিতে একজন প্রধান শিক্ষক পদায়নের বিষয়ে আমি আমি কথাও বলেছি। আশা করি আজ কালের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।