স্কুলছাত্রী লিখল মুক্তিযুদ্ধের গান, গেয়ে হলো দেশসেরা

নিজের লেখা গান গেয়ে দেশসেরা হওয়া আদিশ্রী সাহা
নিজের লেখা গান গেয়ে দেশসেরা হওয়া আদিশ্রী সাহা  © সংগৃহীত

নিজেই লিখে সুর করেছিল মুক্তিযুদ্ধের গানটি। পরে তা নিজে গেয়ে দেশসেরা হয় আদিশ্রী সাহা। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার নগেন্দ্র নারায়ণ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী সে। বাবা তাপস কুমার সাহা কলেজশিক্ষক। মা রিতা রাণী রায় গৃহিণী। দুই ভাইবোনের মধ্যে সে ছোট।

জানা গেছে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় সংগীত বিভাগে মাধ্যমিক স্তরে দেশসেরা হয় আদিশ্রী সাহা। ‘বিজয়ের দেশ আমার বাংলাদেশ’ শিরোনামে গান লিখে ও সুর করে মুক্তিযুদ্ধের গানটি গেয়ে এ সাফল্য আসে তার। সম্প্রতি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এ পুরস্কার তুলে দেন তার হাতে।

আদিশ্রী সাহার ভাষ্য, ‘নতুন গান গাওয়ার কথা শুনে একটু সমস্যায় পড়ে যাই। হাতে সময়ও ছিল অল্প। পরে কয়েকজনের পরামর্শে গানটি নির্ধারণ করি। নিজের লেখা ও সুরের গান জাতীয় প্রতিযোগিতায় কেমন হবে, তা নিয়ে প্রথমে বিচলিত ছিলাম। পরে পরিবার ও সংগীতগুরু মামুনুল ইসলাম রনির সহযোগিতায় নতুন করে সাজাই গানটি।’

জানা গেছে, জাতীয় ও বিভাগীয় পর্যায়ের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কুইজ, নৃত্য, সংগীত, চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সেখানে উপজেলা, জেলা, অঞ্চল ও বিভাগীয় পর্যায়ে আদিশ্রী দেশাত্মবোধক গান গেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করে জাতীয় পর্যায়ে যায়।

জাতীয় পর্যায়ে শর্ত ছিল প্রতিযোগীকে মুক্তিযুদ্ধের নতুন গান গাইতে হবে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে নিজেই গানটি লেখে আদিশ্রী। শিরোনাম ছিল ‘বিজয়ের দেশ আমার বাংলাদেশ’। ওই গান গেয়েই জাতীয় পর্যায়ে প্রথম হয়েছে এ কিশোরী।

আরো পড়ুন: জলবায়ু বিষয়ক আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা, পুরস্কার ১ লাখ টাকা

আদিশ্রী জানায়, ‘আমার গানটি গেয়েই জাতীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছি। এর চেয়ে ভালো লাগার কিছু হতে পারে না। এতটা মানসিক শান্তি কখনো পাইনি। আমার আত্মবিশ্বাস বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে এ পুরস্কার।’

আদিশ্রীর বাবা তাপস কুমার সাহা বলেন, ‘প্রয়াত সীমা কুন্ডুর হাত ধরে সাড়ে তিন বছর বয়সেই সংগীতে হাতেখড়ি আদিশ্রীর। ১১ বছর ধরে চর্চা চলছে। ৯ বছর তালিম নিচ্ছে মামুনুল ইসলাম রনির কাছে। এ বয়সেই আদিশ্রী চারটি জাতীয় পদক জিতেছে। এ ছাড়া অন্তত ২০টি পুরস্কার অর্জন করেছে। ‘চ্যানেল আই গানের রাজা’য় ২০১৯ সালে শীর্ষ ১২-তে স্থান পায় আদিশ্রী।’

তার সংগীত শিক্ষক মামুনুল ইসলাম রনি বলেন, ‘প্রতিভাবান ও কোকিল কণ্ঠের অধিকারী আদিশ্রী। তার অর্জন অনুপ্রাণিত করে।’


সর্বশেষ সংবাদ