চিত্রনায়িকা শিল্পীর পরিবারের ৩৫ জন করোনায় আক্রান্ত

সন্তানদের সঙ্গে শিল্পী
সন্তানদের সঙ্গে শিল্পী  © সংগৃহীত

চলচ্চিত্র অভিনেত্রী শিল্পীর পরিবারের প্রায় ৩৫ জন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের কেউ কেউ এখন হাসপাতালে করোনার সঙ্গে লড়াই করছেন, কেউ দ্বিতীয়বার করোনা পরীক্ষা করাবেন। অনেকে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাসাতেই চিকিৎসাধীন। পারিবারিক একটি বিয়ের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করেই করোনা ছড়ায়। ধারণা করা হচ্ছে, সেই সময় এই অভিনেত্রী সপরিবারে করোনায় আক্রান্ত হন।

প্রথমদিকে দু-একজন করোনায় আক্রান্ত হলেও পরে পাঁচ–ছয়জন করে একসঙ্গে করোনায় আক্রান্ত হন। একে একে সবাই করোনায় আক্রান্ত হন। যে কারণে আক্রান্ত ব্যক্তিদের দেখভাল করারও লোকের সংকট হয়। শিল্পী জানান, তাঁর স্বামীর ১০ ভাইবোন। তাঁদের বউ, ছেলে, মেয়ে, নাতি–নাতনিসহ প্রায় সবাই আক্রান্ত হয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিবারের একজনের বিয়ে ছিল। স্বল্প পরিসরে সেখানে পরিবারের সবাইকে জড়ো হতে হয়েছিল। পরে দেখা যায়, আমার পরিবার, আমার ভাইয়ের পরিবার, আমার শ্বশুর–শাশুড়ি, ভাশুরদের পরিবারের প্রায় সবাই করোনায় আক্রান্ত হন। আমাদের পরিবারের ওপর দিয়ে একটা ঝড় গেছে।’

শিল্পী জানান, আক্রান্ত অনেকে সুস্থ হয়ে বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেকেই দু–এক দিনের মধ্যে করোনা পরীক্ষা করাবেন। এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছেন তাঁর ভাই–ভাবি।

এর আগে গত নভেম্বর মাসের ২৮ তারিখে চিত্রনায়িকা শিল্পীর করোনা আক্রান্তের খবর প্রকাশ পায়। সে সময় শিল্পী জানান, হাসপাতালে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়নি তাঁর। টানা সাত দিন বাসায় চিকিৎসা নেন। ভেবেছিলেন সুস্থ হয়ে উঠবেন। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থা গুরুতর হয়ে ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে ঢাকায় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এই অভিনেত্রীকে।

ডাক্তার জানান, করোনা তাঁর ফুসফুসে আক্রমণ করেছিল। শিল্পী বলেন, ‘বাচ্চাদের কথা চিন্তা করে প্রথমদিকে ভর্তি হতে পারিনি। পরে তো প্রচণ্ডভাবে সমস্যা দেখা দিল। ১৫ দিন টানা আমার জ্বর ছিল। গত ৯ তারিখ থেকে ৪ দিন কথা বলাই বন্ধ হয়ে যায়। একসময় চিকিৎসকেরাও ঘাবড়ে গিয়েছিলেন।’ সম্প্রতি শিল্পী বাসায় ফিরেছেন। গত ২৩ দিন শিল্পীকে করোনার সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। এখনো শারীরিকভাবে তিনি দুর্বল। চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খাচ্ছেন। জানালেন, কথা বলা বা চলাফেরা করলে তাঁর হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাচ্ছে। দুই মাস তাঁকে বিশ্রাম নিতে হবে।

প্রায় দুই দশক আগে সিনেমা ছেড়েছেন শিল্পী। ২০০১ সালের শেষের দিকে মুক্তি পায় তাঁর শেষ ছবি। পরে বাংলা সিনেমায় অশ্লীলতার পর্ব শুরু হলে অভিনয় থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। এখনো তিনি ছবিতে অভিনয়ের ডাক পান। তবে সন্তানদের সময় দিতে হয় বলে অভিনয় করা হয় না। ক্যারিয়ারের ৫ বছরে প্রায় ৩৫টি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। সেসব কাজের স্মৃতি আঁকড়েই থাকতে চান শিল্পী।

শিল্পীর প্রথম ছবি মোহাম্মদ হোসেন পরিচালিত ‘বাংলার কমান্ডো’ মুক্তি পায় ১৯৯৫ সালের ১১ মে। শিল্পী অভিনীত ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘প্রিয়জন’, ‘বাবা কেন চাকর’, ‘শেষ প্রতীক্ষা’, ‘মুক্তি চাই’, ‘লাভলেটার’, ‘বীর সন্তান’, ‘মিথ্যার মৃত্যু’, ‘দোস্ত আমার দুশমন’, ‘গৃহবধূ’, ‘কে আমার বাবা’, ‘রাজপথের রাজা’, ‘শক্তের ভক্ত’, ‘সুজনবন্ধু’ ইত্যাদি। তবে ‘বাবা কেন চাকর’, ‘লাভলেটার’, ‘সুজনবন্ধু’ ও ‘প্রিয়জন’ ছবিগুলো তাঁর ভীষণ প্রিয়।


সর্বশেষ সংবাদ