যেভাবে বাংলাদেশি থেকে ভারতীয় হলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়
৮৬ বছর বয়সে শেষ হল উপমহাদেশের বরেণ্য অভিনেতা, আবৃত্তিকার সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কর্মময় পথচলা। আজ রোববার (১৫ নভেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। গত শুক্রবার থেকে সৌমিত্রর শারীরিক অবস্থার আশঙ্কাজনক অবনতি ঘটতে থাকে।
এর আগে হৃদযন্ত্র আর কিডনির জটিলতা অনেকটা বেড়ে যায় তার। এদিকে জনপ্রিয় কিংবদন্তির মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে ভারতীয় সিনেমার আঙিনায়। শোক প্রকাশ করছেন ভারতের নানা অঙ্গনের খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বরা।
তার মৃত্যুতে বাঙালি হারাল এ সময়ের এক অন্যতম সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে। প্রায় সাত দশকের দীর্ঘ ফিল্ম-ক্যারিয়ার সৌমিত্রের। সত্যজিৎ রায়ের ‘অপুর সংসার’ দিয়ে শুরু তার অভিনয়জীবন।
এই অভিনেতার মৃত্যুর বেদনার সুর বিষাদের বাঁশি হয়ে বেজেছে এই বাংলাদেশেও। এ বাংলাতেও তুমুল জনপ্রিয় ছিলেন সৌমিত্র। বেশ কয়েকবার এখানে এসেছেনও। কখনো অভিনেতা হয়ে, কখনো কবি-আবৃত্তিকার হয়ে। এখানকার শিল্প-সংস্কৃতিকে আজীবন ভালোবেসেছেন সৌমিত্র। এই দেশ ও দেশের মানুষকে ভেবেছেন সজ্জন।
বাংলাদেশ নিয়ে তার বিশেষ দুর্বলতার কারণ এখানেই তার পিতৃভিটা। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পরিবারের আদি বাড়ি ছিল বাংলাদেশের শিলাইদহে। সেখানকার ‘কয়া’ নামের একটি গ্রামে বাস করতো সৌমিত্রের পরিবার। তার পিতামহের আমল থেকে চট্টোপাধ্যায় পরিবারের সদস্যরা নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে চলে যান। এ যাত্রার উদ্দেশ্য ব্যবসা-বাণিজ্য।
তার বাবা ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টে ওকালতি করতেন। প্রতি সপ্তাহান্তে বাড়ি আসতেন। এ আসা যাওয়া অনেক ভোগান্তির ছিলো। তাই তিনি পরিবার নিয়ে কলকাতায় পাড়ি দেন। তারপর থেকে কলকাতারই বাসিন্দা সৌমিত্র।
দর্শক নন্দিত এ অভিনেতা জীবনের বেলাশেষে চলে গেলেন অতল মৃত্যুর আহ্বানে। বাঙালি হারাল এ সময়ের এক অন্যতম সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে। প্রায় সাত দশকের দীর্ঘ ফিল্ম-ক্যারিয়ার সৌমিত্রের।