নিঃসন্দেহে সাদ্দাম সুবক্তা

হোসাইন সাদ্দাম
হোসাইন সাদ্দাম  © সংগৃহীত

বক্তা হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদিতে দাওয়াত পাইতাম। সু-বক্তা হিসেবে সামান্য খ্যাতি আমার ছিল। বক্তব্য সুন্দর করার খাতিরে আমি কখনও কোনো কবির দু-একটা চরণ টুকিয়া লইতাম অথবা উপন্যাসের শ্রুতিমধুর কোনো বাক্যালাপ। একবার দারুণ ঘটনা ঘটিয়া গেল। আমার বক্তব্যে রীতিমত সাড়া পড়ে গেল। উপস্থিতির অধিকাংশ গুণমুগ্ধ!

আমি মঞ্চ থেকে নামতেই এক স্কুল পড়ুয়া এসে বললো- ভাইয়া আপনার বক্তব্যের প্রথম অংশ আমারও মুখস্থ। পাঞ্জেরি গাইডের মাদক ও ভয়াবহতা রচনার ভূমিকা না? আমি মৃদু হেসে প্রস্থান করলাম।

আপনারা যারা উচ্চ মাধ্যমিকে ‘যৌবনের গান’ প্রবন্ধ পড়িয়া বড় হইছেন, তারা বেশ করিয়াই জানেন উহা নজরুল ইসলামের লিখিত বক্তব্য। আমি অনেক জায়গায় কথা বলিতে গেলে তা থেকে দু-এক লাইন কপি করিয়া স্ব-ভাষায়, স্ব-ভঙ্গিতে প্রকাশ করি। শ্রোতারা বরাবরই হাততালি দিয়ে আমাকে প্রশংসিত করেছে। উচ্ছ্বসিত আমিও মনের মধ্যে এক প্রগাঢ় প্রশান্তি লইয়া বক্তব্য শেষ করিতাম।

আরও পড়ুন: গুগল-মাইক্রোসফটের মতো প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্ব দেবে ছাত্রলীগ: সাদ্দাম

মূল কথায় আসা যাক, ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দামের এক দারুণ বক্তব্য ভাইরাল হয় দিন দুই-তিনেক আগে। পরক্ষণেই নিন্দুকের দৃষ্টি বক্তব্যে পড়ে। আনন্দবাজার ডিজিটালে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কীয় এক লেখার প্রথম অংশ সুনিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তার বলিষ্ঠ কণ্ঠে।

গতকাল থেকে সেটি ফেসবুকের পাতায় স্ক্রিনশট হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ‘চোর’ বলেও গালি দিচ্ছে কেউ কেউ। আহারে বাপু! সে কোন ভার্সিটির থিসিস পেপার জমা দিয়ে অঞ্জন রায়ের লেখা কপি করেছে। বরং অঞ্জন রায়ের লেখার ভূমিকা অংশের দারুণ কথ্যরূপ আমাদের দেখিয়েছে সাদ্দাম। আমার দৃষ্টিতে সাদ্দাম একজন সুবক্তা।

সাদ্দাম আজকের বক্তা না। সে ছাত্রলীগ নেতা হওয়ার আগে থেকেই আমি তার একজন গুণগ্রাহী। তার স্কুলের বিদায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য শুনে তাজ্জব বনে গিয়েছিলাম। কি তার শব্দচয়ন! কি তার চিন্তাশক্তি!

আমি যেদিন তার ওই বক্তব্য শুনেছিলাম, সেদিনই ভাবেছিলাম বক্তা হিসেবে তার মুখে বখতিয়ারের ঘোড়া ছোটাতে পারেন। এইরে! ঘাড় মেরেছে! আমি অভ্যাসবশত আবার কপি করে ফেললাম আরেকজনের লেখা থেকে। আপনার উপলব্দির জন্য তার বক্তব্যের লিংক যুক্ত করে দিলাম- শুনবেন। সেদিন তার হাতে ইন্টারনেট ছিল না। [ফেসবুক থেকে সংগৃহীত]

লেখক: সহযোগী সম্পাদক, অধিকার.নিউজ


সর্বশেষ সংবাদ