দেশি পোশাক নাকি বিদেশি— তসলিমা নাসরিনের স্ট্যাটাস
ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিন দাবি করেছেন, ‘আমাদের পূর্ব পুরুষেরা শুধু নেংটি পরতো, পূর্ব নারীরা বক্ষ বন্ধনীও পরতো না, তারাও ওই নেংটিই পরতো। অন্তরীয় উত্তরীয় কোমরবন্ধ এসেছে আরও পরে।’
সোমবার (২৯ আগস্ট) বিকাল ৪টা ২ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে এই দাবি করেন তিনি।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি জানান, ‘কিছুদিন আগে বাংলাদেশের কিছু বোরখাওয়ালি মেয়ে আর কিছু পশ্চিমা পোশাক পরা ছেলে পোস্টার নিয়ে দাঁড়িয়েছে ফুটপাতে, পোস্টারে যা লেখা, তা হলো, দেশের লোকেরা যেন বিদেশি পোশাক ছেড়ে দেশি পোশাক পরে, বিদেশি সংস্কৃতি নয়, দেশি সংস্কৃতি মেনে চলে, ছোট পোশাক নয়, বড় পোশাক পরে।’
পোস্টারের বিষয়বস্তুর বর্ণনা দিয়ে তিনি জানান, ‘পোস্টার যারা ধরে আছে, তারা কিন্তু বিদেশি পোশাকই পরে আছে। মেয়েরা পরে আছে মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমির সংস্কৃতির পোশাক, আর ছেলেরা পরে আছে ইউরোপের পোশাক। দেশি পোশাক পরতে হলে তো ছেলে মেয়ে উভয়কেই ছোট পোশাক পরতে হয়। দেশি পোশাকের উদ্দেশ্য ছিল কিছু সুতো, মালা বা কাপড়ের টুকরো দিয়ে শুধু যৌনাঙ্গটুকু ঢেকে রাখা।’
আরও পড়ুন : সাত কলেজের সমস্যা সমাধানে পরিকল্পনা প্রস্তুত, মন্ত্রণালয়ে যাচ্ছে প্রস্তাব
উপমহাদেশের এই নারীবাদী লেখিকা দাবি করেন, ‘বিদেশিরা আমাদের অঞ্চলে এসে কাপড় চড়িয়েছে আমাদের পূর্ব-নারীপুরুষের গায়ে। আজ উপমহাদেশে যে পোশাকই দেখি, তার খুব কমই দেশি পোশাক। নেংটি একসময় ধুতি হয়েছে, ধুতিই একসময় শাড়ি হয়েছে। বিদেশিরাই ব্লাউজ আর পেটিকোট পরিয়েছে মেয়েদের।’
বাংলাদেশের প্রসঙ্গত টেনে তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের বাঙালি মুসলমানরা মানুক বা না-মানুক, তাদের দেশি পোশাক হলো হিন্দুদের পোশাক, তাদের দেশি সংস্কৃতি মানে হিন্দুদের সংস্কৃতি। তাদের পূর্ব-নারীপুরুষ ছিল এই ভারতবর্ষেরই হিন্দু নারীপুরুষ।’
এর আগে, গত ১৮ মে সকালে নরসিংদী রেলস্টেশনে চট্টগ্রাম মেইল ট্রেনের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন দুই তরুণ ও এক তরুণী। মেয়েটির পরনে ছিল জিন্স প্যান্ট ও স্লিভলেস টপস। এ কারণে ওই তরুণীকে হেনস্তার অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ভৈরব রেলওয়ে থানায় মামলা হয়।