বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকার বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে দশটি বিশেষ উদ্যোগ রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম উদ্দ্যোগ হলো ‘বিনিয়োগ বিকাশ’। দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে এই কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। ‘বিনিয়োগ বিকাশ’ বহির্বিশ্বে এমনভাবে ব্র্যান্ডিং করা হচ্ছে যাতে বিদেশীরা এদেশে বিনিয়োগ এগিয়ে আসেন। এছাড়া দেশী উদ্যোক্তাদেরও আস্থা ফিরিয়ে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারের পদক্ষেপ
বিনিয়োগ আকর্ষণে ইতোমধ্যে সরকার বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। জাতীয় শিল্পনীতিও বিনিয়োগবান্ধব করা হয়েছে। এ নীতিতে বলা হয়েছে, কোন বিদেশী নাগরিক বাংলাদেশে ১০ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বা প্রায় আট কোটি টাকা বিনিয়োগ করলে অথবা কোন স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে ২০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ প্রায় ১৬ কোটি টাকা স্থানান্তর করলে তাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়া হবে। সরকারের এই উদ্যোগকে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা ইতিবাচক হিসেবে দেখছে।
• এছাড়া ভারত, চীন, জাপান ও কোরিয়ার বিনিয়োগ বাড়াতে ওই দেশগুলোর জন্য পৃথক অর্থনৈতিক অঞ্চল সংরক্ষণ করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
• দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এর ফলে দেশের রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পাবে এবং কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
আরও পড়ুন: ১৭ কোটি টাকার বিনিয়োগ পেল টেন মিনিট স্কুল
আমাদের দেশ কতটা বিনিয়োগ বান্ধব?
বিদ্যুৎ, আইসিটি এবং যোগাযোগ খাতের উন্নয়নে বিনিয়োগের নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।
• পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেল, তৃতীয় সমুদ্রবন্দরসহ ছোট-বড় অসংখ্য অবকাঠামো নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে।
• মহেশখালীতে দেশের প্রথম ২টি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন কার্যক্রম ইতোমধ্যে সমাপ্ত হয়েছে।
• মহাসড়কসমূহ চার লেনে উন্নীত হয়েছে।
• ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে।
• বাংলাদেশের সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে দেশের অভ্যন্তরে এবং আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে পণ্য পরিবহণের ব্যবস্থা সহজতর হয়েছে।
• চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দর অত্যাধুনিক সমুদ্রবন্দর হিসেবে গড়ে উঠেছে।
• বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ইতোমধ্যে শিল্প উৎপাদন শুরু হয়েছে।
বিনিয়োগ আকর্ষণ বাড়াতে কী করণীয়
• ব্যক্তিগত বিনিয়োগের স্থবিরতা দূর করে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে।
• বেসরকারি বিনিয়োগের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত প্রতিবন্ধকতা দূর করা।
• বাজেটেও প্রবৃদ্ধি সহায়ক খাতসমূহকে অগ্রাধিকার দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে ভৌত ও সামাজিক অবকাঠামো খাত বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পরিবহন, যোগাযোগ, বন্দর উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আইসিটি খাতে অধিকতর সম্পদ সঞ্চালন করায় অধিক মনোযোগী হতে হবে।
• দেশী ও বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প নিবন্ধন, লিয়াজোঁ, ব্রাঞ্চ ও রিপ্রেজেনটেটিভ অফিসের অনুমোদন, বৈদেশী কর্মীদের কর্মানুমতি প্রদান, প্রাক অবকাঠামোগত সেবা প্রদান সহজতরকরণসহ অনলাইনের মাধ্যমে সকল ধরনের সেবা স্বল্প সময়ে প্রদান করতে হবে।
• দেশে ও বিদেশে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ, রোডশো ইত্যাদি আয়োজন করতে হবে।
লেখক: শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়