বন্ধুর বউ— মোটামুটি একটা বিপজ্জনক টার্ম....
রুবাইয়াতকে আমি প্রথম চিনি বন্ধুর বউ হিসাবে। ‘বন্ধুর বউ’ মোটামুটি একটা বিপজ্জনক টার্ম হয়ে উঠতে পারে যেটা নিয়ে একটু পরে কথা বলবো। তো জানতে পারলাম ও আমেরিকা থেকে পড়াশোনা করে আসছে।এবং একদিন জানতে পারলাম সে মেহেরজান নাৃমে একটা ছবি বানাচ্ছে। ছবিটা বানানোর পরে এটা নিয়ে নানা কাহিনী শুরু হলো। হল থেকে নামানো হলো। তখন আমি ছবি নিষিদ্ধ করার প্রবণতার বিরুদ্ধে লিখলাম, সম্ভবত কালের কন্ঠে। যদিও মেহেরজান আমার পছন্দের কোনো ছবি ছিলো না, ফিল্মমেকারের ভিশনের দিক থেকে বলতে গেলে। তারপরও এটাকে নিয়ে যে অদ্ভুত মরাল ওয়ার দেখলাম সেটার বিরুদ্ধে কথা বলা প্রয়োজন মনে করেছি বলে লিখি।
কিন্তু এইসব আলোচনা ছাপিয়ে যে জিনিসটা আমাকে পীড়া দিতে থাকলো সেটা হলো “প্রগতিশীল” মহলে জোরেসোরে চলা একটা প্রপাগান্ডা। প্রপাগান্ডাটা ছিলো এইরকম যে, রুবাইয়াত আসলে ছবিটা বানায়নি, বানিয়েছে ওর হাজব্যান্ড। আমি দেখলাম ‘বন্ধুর বউ’কে একটা সৃজনশীল স্বাধীন ইলামেন্ট হিসাবে দেখতে সংকোচ হচ্ছে আমাদের অনেকেরই। ব্যাপারটা আমাকে পীড়িত করলেও অবাক করে নাই।
আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের অন-ক্যাম্পাস কাজের সুযোগ প্রসঙ্গে
এর অনেক দিন পর রুবাইয়াত একদিন দাওয়াত করলো ওর বাসায় ওর পরের ছবি আন্ডার কন্স্ট্রাকশনের একটা কাট দেখার জন্য। সত্যি বলতে আমি কোনো রকম উচ্চ আশা ছাড়াই ছবিটা দেখতে যাই। এবং ছবি দেখে চমকে যাই। ছবিটার মধ্যে আমি স্পষ্ট একজন পরিচালকের আত্মা এবং ব্যাক্তিত্ব খুঁজে পাই। ছবিটার সততা দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে যাই। তারপর থেকে রুবাইয়াতের সঙ্গে আমার সখ্য তৈরি হয়। ও আমার বন্ধু, সহকর্মী, আর বোনে পরিনত হয়। আমি আন্ডার কন্স্ট্রাকশনের পরে ওকে একটা কথা বলি। বলি যে, ভালো ছবি বানানো তো যেকোনো ফিল্মমেকারের জন্যই একটা সংগ্রাম! কিন্তু মেয়েদের জন্য বোধ হয় সেটা ডাবল সংগ্রাম যেখানে সমাজ, এমনকি প্রগতিশীল সমাজও, বিশ্বাস করতে রাজী না যে একটা মেয়ে নিজের ছবি নিজেই বানাতে পারে।
যাই হোক, রুবাইয়াতের নতুন ছবি ‘শিমু’ মুক্তি পাচ্ছে শুক্রবার। আজকে ছিলো প্রিমিয়ার শো। ব্যস্ততার কারনে আজকে ছবিটা দেখতে পারিনি। সবার সাথে টিকেট কেটেই দেখবো।
অল দ্য বেস্ট, রুবাইয়াত। কিপ রকিং।
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)