ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে হবে
- শাহরিয়ার ইমন জয়
- প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৮:৩৮ PM , আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৮:৩৮ PM
আমরাই পৃথিবীর একমাত্র জাতি; যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছি। কথায় আছে, ‘আগে চাই মাতৃভাষার গাঁথুনি, পরে অন্য কিছু।’ ভাষা আন্দোলনের সোপান বেয়ে এসেছে স্বাধীনতা। কিন্তু সে ভাষা আজ অবহেলিত, অবজ্ঞার শিকার।
যে ভাষার জন্য শহীদরা রক্ত দিলো, তারা কী পেলেন? তাদের মর্যাদা কি আমরা দিতে পেরেছি? মায়ের ভাষা রক্ষার জন্য যারা নিজের জীবনকে কোরবানি দিলেন, তাদের জীবনের মূল্য আমরা কতটুকু দিতে পারলাম?
দীর্ঘ প্রায় সত্তর বছর কেটে গেলো, আমরা তাদের আত্মদানের কোনো মূল্য দিতে পারলাম না। একবার ভাবছি না যে, পাওনাদারের পাওনা শোধ করা হয়নি।
রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবছর ফেব্রুয়ারিতে মাসব্যাপী বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভাষা আন্দোলনের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্বব্যাপী ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়ে আসছে। জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের জন্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্য থেকে একুশে পদক প্রদান করা হচ্ছে।
বাংলা ভাষার উৎকর্ষ বৃদ্ধির জন্য রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি কাজ করে যাচ্ছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলা ভাষাকে যে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে, আমরা ব্যক্তি পর্যায়ে বাংলার প্রতি ততটুকু শ্রদ্ধাশীল? বাংলা ভাষার প্রতি আমাদের দায়দায়িত্ব কি যথাযথভাবে পালন করছি?
আরও পড়ুন: ১১ মার্চ ছিল প্রথম ভাষা দিবস
২১ ফেব্রুয়ারি আসলে শহীদের জন্য কান্নাকাটি শুরু হয়। শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। সারাদিন আলোচনা, মিটিং, সেমিনার। সর্বত্র বাংলা ভাষার প্রচলন করার আলোচনা। ২১-এর পরে শহীদ মিনারগুলোও অরক্ষিত হয়, অপবিত্র হয়। বিভিন্ন অপকর্মের নিরাপদ জায়গায় পরিণত হয়।
মনে রাখতে হবে, বাংলা ভাষার সংকট রয়ে গেছে। এই ভাষার সবচেয়ে বড় সংকটটি হচ্ছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার অভাব। এই সংকট নিরসনে বাংলা ভাষা, বাংলা সাহিত্য ও জাতীয় সংস্কৃতির উন্নয়নে বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, শিশু একাডেমি প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানের কার্যকলাপের প্রতি প্রচারমাধ্যমের সক্রিয়তা দরকার। ১৯৭২ সালে বিলুপ্ত করা বাংলা উন্নয়ন বোর্ড, পরিবর্তিত বাস্তবতা বিচার করে নতুনভাবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
লেখক: শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মী