বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও নতুন প্রজন্ম

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট  © প্রতীকী ছবি

পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অনেকটা জটিল। এ দেশের মাটিকে বলা যায় একটি রাজনীতির ক্ষেত্র। বহু বছর যে মাটিকে নিয়ে তৈরি হয়েছিল নানা জল্পনা-কল্পনা । সে দিক দিয়ে বলা যায় বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থেই একটি রাজনৈতিক দেশ।

যারা ব্যক্তির চেয়ে দেশ ও দশের কথা ভাবেন, রাজনৈতিক মনোভাব পোষণ করেন তাদেরকে সাধারণত রাজনীতিবিদ বলা হয়ে থাকে। তারা দেশের যেকোনো সংকটে সামনের কাতারে থাকেন ও দেশকে পরিচালনা করেন। কিন্তু সরকারি চাকুরির মতো কি রাজনৈতিক মাঠেও বয়সসীমা রাখা গেলে রাজনৈতিক সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি এবং দেশকে নতুন কিছু দেওয়ার জন্য নতুন রাজনীতিবিদের সহজ হতোনা?

লক্ষ্য করলে দেখা যায়, বয়সের ভারে অনেক প্রবীণ নেতারা সংসদে কথা বলতেই পারেন না, সাংসদ হিসেবে নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্যই ভুলে যান। আমাদের দেশের অনেক সাংসদ আছেন যারা অনেকেই বৃদ্ধ হয়েছেন, সংসদে কথা বলতেই সমস্যা হয় এবং তারা অনেক সময় বুঝতেই পারেন না যে সংসদের চলমান আলোচনার বিষয়টি কী। এতে করে নানা বিপাকের মধ্যে পরতে হয় স্পীকারসহ বাকি সাংসদের।

একটা দেশকে পরিচালনা করার জন্য কি বয়স্ক সাংসদদের খুবই প্রয়োজন, এ প্লাটফর্ম ছেড়ে দিয়ে নতুন প্রজন্মের হাতে নেতৃত্বের গুরুদায়িত্ব দেওয়া যায় না? নতুনদের সুযোগ করে দিয়ে দেশের উন্নয়নের জন্য তারা যদি উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তাহলে হয়তো দেশ অনেকাংশেই সাফল্যের দিকে অগ্রসর হবে।

কিন্তু আমরা এমন কিছু নিয়মে নিমজ্জিত যে আমরা সেখান থেকে আর বের হতে চাইনা। আমাদের সকলেরই বুঝতে হবে যে আমাদের কোন যায়গাটায় শূন্য রয়েছে। আমাদের সাংসদদের ক্ষমতা লোভী না হয়ে দেশের মানুষের স্বার্থে, দশের স্বার্থে যদি রাজনৈতিক পরিমন্ডলে একটা পরিবর্তন আনা যায়, তাহলে এ পরিবর্তন হবে কল্যাণময়ী পরিবর্তন।

আমরা ক্ষমতা হারানোর ভয়ে নিয়মগুলোকে আঁকড়ে ধরে থাকি। এতো সব সমস্যা কি তাহলে বয়সের কারণেই ঘটছে না? যদি একটা নির্দিষ্ট বয়সসীমা থাকে তাহলে সংসদের সৌন্দর্য বহাল থাকবে যেমন তেমনিভাবে তৈরি নতুন রাজনৈতিক তরুণ সমাজ। এতে করে তরুণরা রাজনীতি বিষয়টিকে বুকে ধারণ করে দেশকে বিশ্বের দরবারে দাম্ভিকতা নিয়ে উপস্থাপন করতে পারবে। নতুন প্রজন্মের মনে সবসময় বিশ্বমানের আইডিয়া ঘুরপাক খায়, নিত্যনতুন কাজ করার বাসনা তৈরি হয় ,তারা চায় সেভাবে আগাতে যেমনটা বিশ্ব আগাচ্ছে।

কিন্তু সুযোগ খুব কম, বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে। কেননা, এখানে প্রবীণরা ধরে আছে রাজনীতির মূল মাঠ এবং নতুনদের সেভাবে এখনো সুযোগ দেওয়া হয়নি এবং বিরোধী দলীয় জোট না থাকায় খুব কম সংখ্যক নতুন প্রতিনিধি তারা প্রতিনিধিত্ব করছে।

অদূর ভবিষ্যতে যদি রাজনীতির মাঠ সুস্থ হয় আর বেশি করে নতুনরা মূল ধারার রাজনীতিতে আসতে পারে, তাহলে আশা করাই যেতে পারে বাংলাদেশ সবকিছু, সব যুগ ছাপিয়ে যাবে।

লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


সর্বশেষ সংবাদ