অধিভুক্ত সাত কলেজের সমন্বয় চায় শিক্ষার্থীরা
২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সাত সরকারি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত করা হয়েছে। কলেজগুলো- হচ্ছে ঢাকা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।
শিক্ষা কার্যক্রমে উন্নতির লক্ষ্যে এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর চাপ কমাতে এসব কলেজকে অধিভুক্ত করেছে ঢাবি। কিন্তু নানা রকম অনিয়ম অভিযোগের কারণে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে তিক্ত অভিজ্ঞতার জন্ম হয়েছে। তাই ঢাবি অধিভুক্ত হওয়ায় সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রথমে যতটা আনন্দিত হয়েছে, আজ অনেকাংশে ততটাই বিরক্ত। অনেক দিন ধরেই শিক্ষার্থীরা নানা অভিযোগ জানিয়ে আসছে। নিচে তার কিছু তুলে ধরা হলো-
১) সেশনজট, অতিরিক্ত ফি ধরা;
২) সঠিক তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে হয়রানি (ঢাবি বলে কলেজে যাও, কলেজ বলে ঢাবি যাও);
২) নতুন প্রশ্ন কাঠামোতে শিক্ষার্থীদের ধারণা না দেওয়া;
৩) ফর্ম পূরনের কিছুদিনের মধ্যেই পরীক্ষা নেওয়া;
৪) পরীক্ষার ফলাফল ১০/১১ মাস পরে দেওয়া;
৫) গণহারে পরীক্ষায় ফেল করানো;
৬) সকল ধরনের শিক্ষা বিষয়ক নিয়ম কানুন ঢাবি অনুযায়ী হলেও উন্নত পাঠদানের কোনো ব্যবস্থা; নেই। ফলে সিজিপিএ তুলনামূলক নিম্নমানের;
৭) শিক্ষকদের সম্মানী বিল পেতে নানা হয়রানি ও ভোগান্তি;
৮) প্রশ্নপত্র প্রণয়নে সমন্বয়হীনতা, উত্তরপত্র বণ্টনে বৈষম্য;
৯) প্রশ্ন প্রণয়ন কমিটি গঠনে বৈষম্য;
১০) বিভিন্ন কাজে অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষকদেরকে অবহেলা;
১১) সাত কলেজের অধ্যাপকদের নাম ঢাবির একজন প্রভাষকের নামের নিচে রেখে কমিটি গঠন;
১২) একই ইনকোর্স নাম্বার একাধিকবার পাঠানোর পরও আবার পাঠাতে বলা;;
১৩) কমিটি মিটিংয়ে সিটিং আ্যালাউন্স ও টিএ/ ডিএ না থাকা ইত্যাদি;
ঢাবির কাজ কি শুধু পরীক্ষা নেওয়া? কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নেওয়া! পরীক্ষার প্রশ্ন কাঠামো পর্যন্ত কলেজের শিক্ষকরা জানে না। আমরা সাত কলেজের সংশ্লিষ্টরা ঢাবি দ্বারা বৈষম্যের স্বীকার এবং হাসির পাত্র হয়ে আসছি। চাকরির বাজারে (সিজিপিএ) তুচ্ছ হয়ে আসছে। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দ্বারা আমাদের তিক্ত কথা শুনতে হয়। আলাদা আলাদা আন্দোলন করে অনেকটা বিফল হয়েছি।
পরিশেষে বলতে চাই, সাত কলেজের সকল সমস্যার সমাধান হলো সাত কলেজ সমন্বয় করে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান তৈরি করা। আমরা ঢাবির শাসন চেয়েছিলাম, শোষণ নয়। সাত কলেজ অধিভুক্তি বাতিল চাই।
লেখক: শিক্ষার্থী ,ইংরেজি বিভাগ, বাঙলা কলেজ