তাহলে কি আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আশা বাদ দেব?

ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা
ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা  © ফাইল ফটো

গুচ্ছ কমিটির যুগ্ম আহবায়ক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান স্যার প্রচলিত নিয়মে বিভাগ পরিবর্তই উঠিয়ে দিচ্ছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘পদার্থ, রসায়ন সহ বিজ্ঞানের বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে পরে বিভাগ পরিবর্তন করতে হবে।’’

কিন্তু গত বছরও গুচ্ছের আওতাভুক্ত যেসব বিশ্ববিদ্যালয় আছে সেগুলোতে বিভাগ পরিবর্তনের জন্য আলাদা ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। কেবল জবি ও মাভাবিপ্রবিতে ছিলো না। অর্থাৎ গুচ্ছের আওতাভুক্ত দুইটি বাদে বাকি ১৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগ পরিবর্তন হতো মানবিকের বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে। তাহলে এবার কেন শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে?

জবি উপাচার্য স্যার বলেছেন, দুই-একটি ইউনিভার্সিটিতে দ্বিতীয়বার ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভর্তি নেয়; তিনি হয়তো জানেন না যে, গুচ্ছের আওতাভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে কেবল জবি বাদে বাকিগুলোতে কিন্তু প্রতিবছরই সেকেন্ড টাইমারদের ভর্তি পরীক্ষা ও ভর্তির সুযোগ থাকে। তিনি কি তবে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নিয়মকেই সব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম ভাবছেন?

আমরা গতবার ফার্স্ট টাইমার ছিলাম, কিন্তু আমাদের সাথে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বহু সেকেন্ড টাইমার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। আর এইবার আমরা সেকেন্ড টাইমার। আমরা ২০১৯ সাল থেকে বিভাগ পরিবর্তনের জন্য মানবিকের বিষয় (বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান) প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা কিন্তু কোন ভুল/ অযৌক্তিক বিষয় চাইনি। কারণ ২০১৯ -২০ ব্যাচের ভর্তি পরীক্ষার পরও কিন্তু আগের নিয়ম বলবত ছিলো। তাই আমরা আগের নিয়মে যে বিষয়ে পরীক্ষা হতো তাতেই প্রস্ততি নিয়েছি।

এখন যদি শেষ ২/৩ মাস আগে বলে যে ‘‘নিয়ম চেঞ্জ হচ্ছে আর নিজ বিভাগে পরীক্ষা দিতে হবে’’, তাহলে আমাদের উচ্চশিক্ষার আশা বাদ দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নাই। আমরা কি তবে আসলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আশা বাদ দিবো?

আমরা দীর্ঘ দেড় বছর প্রচলিত বিভাগ পরিবর্তনের পড়াশোনা শেষ করার পর যদি হঠাৎ করে আবারও নিজ বিভাগে পরীক্ষা দেওয়ার মতো অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়, তবে সেই অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত বহন করার ক্ষমতা আমাদের নেই। আমাদের পক্ষে এই দেড় বছর পর আবারও অন্য বিষয়ে প্রস্তুতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়।

গুচ্ছের নাম করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মগুলো আমাদের উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারা যদি নতুন নিয়ম করতে চায় তবে আগের শিক্ষাবর্ষে যখন পরীক্ষা হয় তখন জানিয়ে দিলেই পারতো। তাহলে আমরা সেভাবেই নিজেদের প্রস্তুত করতাম।

করোনাকালীন সময়ে একটি বছর আমরা ঘরবন্দী অবস্থায় ছিলাম। সেটি বিবেচনা করে অন্তত এবারের জন্য বিভাগ পরিবর্তনের জন্য আলাদা পরীক্ষার সুযোগ রাখা হোক। আমাদের দাবি, আমাদের আগের নিয়মে মানবিকের (বাংলা, ইংরেজি, আইসিটি) বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বিভাগ পরিবর্তন করার সুযোগ দেওয়া হোক।

লেখক: দ্বিতীয়বার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী


সর্বশেষ সংবাদ