৪ বছর পর পরীক্ষা, করোনা পজিটিভ নিয়েই হলে এসেছেন প্রার্থী

  © টিডিসি ফটো

ভদ্রমহিলা কোভিডে আক্রান্ত। এই অবস্থাতেই পরীক্ষা দিতে এসছে। বার-কাউন্সিলের পরীক্ষার কথা বলছি। বার-কাউন্সিলের পরীক্ষার ব্যাপারটা বরং আগে বুঝিয়ে বলি। যারা আইন নিয়ে পড়াশুনা করে; তাদের যদি কোর্টে প্র্যাকটিস করতে হয়; তাহলে বার-কাউন্সিলের পরীক্ষায় পাশ করতে হয়।

ভিডিওতে যা দেখলাম; সেটা দেখে আমার চোখ কপালে উঠার জোগাড়! প্রায় চার বছর পর নাকি এই পরীক্ষা হয়েছে আজ। এই করোনার মাঝেই পরীক্ষা হয়েছে। তো, বেশিরভাগ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে গিয়ে দেখে প্রশ্নগুলো সিলেবাসের বাইরে থেকে এসছে। এরপর অনেক পরীক্ষার্থী আন্দোলন করে বের হয়ে যায়। এই অবস্থায় প্রায় দুই ঘণ্টার মতো পরীক্ষা বন্ধ ছিল।

এর মাঝে অনেকে ভেতরে বসে বই-খাতা খুলে পরীক্ষা দিয়েছে। আবার অনেকে বাইরে পরীক্ষার খাতা নিয়ে এসে গাড়ি'তে বসে বই দেখে দেখে লিখছে। যারা বের হয়ে গিয়েছিল, তারা আবার ভেতরে ঢুকতে চাইলে তাদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। ওই ভদ্র মহিলাও এই দলে ছিল।

তিনি বলেছেন, ‘‘দেখেন আমার কিন্তু কোভিড পজিটিভ। এর মাঝেই পরীক্ষা দিতে এসছি। কি করবো! চার বছর পর পরীক্ষা হচ্ছে। এরপর আবার কবে হবে জানি না। এখন এরা আমাকে ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছে না। অথচ ভেতরে মানুষজন বই খুলে পরীক্ষা দিচ্ছে।’’

এইসব দেখে এই মুহূর্তে আমার মাথা ঘুরাচ্ছে! কেউ করোনা ভাইরাস পজিটিভ হয়েও দিব্যি পরীক্ষা দিতে চলে এসছে। সিলেবাস থেকে প্রশ্ন না আসাতে আন্দোলন করে বের হয়ে গিয়েছে। আবার ভিড়ের মাঝে সাংবাদিককে ইন্টার্ভিউও দিচ্ছে।

কেউ বাইরে খাতা নিয়ে এসে গাড়ি'র ভেতরে বসে উত্তর লিখছে। সেই দৃশ্য আবার এই আমি হাজার মাইল দূরের পৃথিবীর সর্ব উত্তরে শীত প্রধান দেশে বসে মহা আনন্দে দেখছি! কিছু মানুষ আবার ভেতরে বসে বই খুলে মনের মাধুরী মিশিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। এদের সবাই পরীক্ষা দিচ্ছে আইন-আদালাত করার জন্য। আইনজীবী হবার জন্য।

আহা কি আনন্দ আকাশে-বাতাসে! শাখে শাখে পাখি ডাকে। কত শোভা চারিপাশে। ইয়ে বলছিলাম কি, আইনজীবী হবার জন্য আলাদা করে আইন নিয়ে পড়ার কী আদৌ তাহলে দরকার আছে? নিজের গাড়িতে বসে বই খুলে পরীক্ষা দিতে পারলে তো আমিও আইনজীবী হয়ে যেতে পারব মনে হচ্ছে। চলুন, দলে দলে আইনজীবী হয়ে দেশ এবং জাতি'কে আইনের আওতায় নিয়ে আসি!

লেখক: সাবেক শিক্ষার্থী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়


সর্বশেষ সংবাদ