সব পীর ভণ্ড নয়, কিছু পীর বীরও হয়

ডক্টর তুহিন মালিক
ডক্টর তুহিন মালিক  © ফাইল ফটো

সব পীর ভণ্ড নয়, কিছু পীর বীরও হয়। আজ এমনই এক পীরের বীরত্ব জায়গা করে নিলো বিশ্বমিডিয়ায়। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম সাহেবের নেতৃত্বে মহানবী (সা.)-কে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অবমাননার প্রতিবাদে ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচিতে আজকের লাখো মানুষের বিক্ষোভ সমাবেশ নজর কেড়েছে গোটা বিশ্বের।

আগামী শুক্রবার বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী হুজুর। খেলাফত মজলিসও গণমিছিল ও দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। গণমিছিলের ডাক দিয়েছে সম্মিলিত ইসলামী দলগুলো। অন্যান্য ইসলামী দলগুলোও বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়েছে।

আমরা সাধারণ মুসলিমরা আমাদের প্রানাধিক প্রিয় নবীর শানে যে কোন বেয়াদবির বিরুদ্ধে মারাত্মক আহত হই। হৃদয়ে রক্তক্ষরণে ছটফট করি। সঠিক নেতৃত্ব খুঁজি। সাহসী নেতা খুঁজি। পথ দেখাবার। নেতৃত্ব দেবার। সম্মিলিত প্রতিবাদ করার। সম্মিলিত গর্জে উঠার।

কিন্তু আমাদের ইসলামিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের অভাবে আমরা দিনদিন নিজেদের দূর্বল করে ফেলেছি। আমরা সাধারনরা সব ইসলামিক দল, সকল সম্মানিত আলেম-ওলামাদেরকে একইভাবে ভালোবাসি। একইভাবে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি। দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক হিংসা বিদ্বেষ, একে অন্যের জনপ্রিয়তাকে মানতে অস্বীকার করা। নিজেদের বিবাদ, বিশৃঙ্খলা, পরস্পরিক দ্বন্দ্ব ও সামান্য স্বার্থের কারণে বিভিন্ন দল-উপদলে বিভক্ত হয়ে পড়া। পার্থিব স্বার্থ, পদ-পদবী ও পার্থিব বিষয়কে কেন্দ্র করে সংঘাতে জড়িয়ে পড়া। অনৈক্য, দলাদলি, গ্রুপিং আমাদের সাধারনের হৃদয়কে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দেয় বারবার।

অথচ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন, ‘তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর রুজ্জু মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরো এবং দলাদলি করে বিভক্ত হয়ো না৷’ (সূরা আল ইমরান- ১০৩)

অর্থাৎ আল্লাহ তা’য়ালা ঐক্য ফরজ ও বিভক্তি হারাম করেছেন। আর বিশ্ব মুসলিমদের এই অনৈক্য ও বিভক্তির সুযোগেই পাপিষ্ঠরা আজ আমাদের প্রানাধিক প্রিয় রাসূলুল্লাহ (সাঃ)কে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্বক কার্টুন এঁকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় নবীর শানে অপমান করার ধৃষ্টতা দেখানোর সাহস পেয়েছে।

তাই এখনই প্রকৃত সময় নিজেদের ভ্রাতৃত্ববোধ এবং ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা। পাশাপাশি নিজেদের আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়ার ওপর ভিত্তি করে বিশ্বব্যাপী ইসলামের শান্তির বানী পৌঁছে দেয়া।

লেখক: আইনজ্ঞ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ


সর্বশেষ সংবাদ