অর্থাভাবে ছাত্রলীগ কর্মীর আত্মহত্যা নয়, এটা প্রতিবাদ

আসিফ তালুকদার
আসিফ তালুকদার  © টিডিসি ফটো

অর্থের অভাবে যে ছাত্রলীগ কর্মী আত্মহত্যা করেছে এটি আসলে আত্মহত্যা নয়; এটি গতানুগতিক ছাত্ররাজনৈতিক চর্চার বিরুদ্ধে একটি মর্মান্তিক, হৃদয়বিদারক প্রতিবাদ। একটা ছেলে যখন ছাত্ররাজনীতি করতে আসে তার থেকে আপনারা কি চান জানেন? ছেলেটা ভালো ছাত্র হতে হবে, কোন ব্যবসা-বানিজ্যের সাথে যুক্ত হতে পারবে না, ঠিকাদারি করতে পারবে না, সর্বোপরি সুপার ক্লিন ইমেজ নিয়ে সংগঠন তথা দেশ ও দশের জন্য নিঃস্বার্থে কাজ করে যাবে।

এগুলো আপনারা ছাত্রনেতা-কর্মীদের থেকে আশা করে থাকেন। আর সারাদিন ফিটফাট কাপড় পরে এসি রুমে বসে নাক শিটকিয়ে বলেন ছিঃ ছাত্ররাজনীতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চেয়ে স্ট্যাটাস দিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীর আত্মহত্যা

আর এই সকল ছাত্রনেতা-কর্মীরা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় রাজপথে ব্যয় করে আপনাদের আশা-আকাঙখা পূরণ করে। একটা ক্লিন ইমেজ নিয়ে ২৯ বছর বয়সে ছাত্ররাজনীতি শেষ করে যখন আপনাদের কাছে যায় তখন আপনারা দেখা করেন না, দেখেও না দেখার ভান করেন, ফোন ধরেন না, ভাইভাতে গেলে ছাত্রলীগ দেখে আগে বাদ দেন। আপনারা দিনশেষে তাদেরকে লালন করেন যারা নিজের কাজের মাধ্যমে সংগঠনের ভাবমূর্তির দিকে নজর না দিয়ে ব্যাংক ভর্তি টাকা বা ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রতিষ্ঠিত।

একটা নেতা বা কর্মী ২৯ বছর পর্যন্ত সুপার ক্লিন পলিটিক্স করে দেখবে তার মাথায় পিতা-মাতা, পরিবারের দায়িত্ব বহনের ভার পড়েছে, এ দিকে চাকরির বয়সও শেষ।

গতানুগতিক রাজনৈতিক চর্চা থেকে সরে এসে ছাত্র রাজনৈতিক ব্যবস্থা সংস্কার না করতে পারলে আপনাদের চাওয়া অনুযায়ী সুপার ক্লিন রাজনৈতিক চর্চা করা ক্লিন ইমেজের ছাত্র-নেতাকর্মীরা আজীবন শুধু বেকারত্বের বোঝা নিয়ে চলবে, কেউ জীবন যুদ্ধে টিকে থাকবে, আর কেউ হয়তো লড়তে লড়তে হারিয়ে যাবে।

আর আপনারা প্রতিষ্ঠিত সুশীল সমাজ বনে যাওয়া মহাশয়েরা যারা টিকে থাকবে; তাদের থেকে নেবেন ক্রেডিট আর যারা হারিয়ে যাবে তাদের দেবেন একটা শোক বার্তা! সময়ের চাহিদা অনুযায়ী ছাত্র রাজনৈতিক ব্যবস্থা যদি এখনই বিনির্মাণ করা না যায়, তাহলে প্রতিশ্রুতিশীল এই বাংলাদেশে সব থেকে বড় বোঝা হয়ে যাবে ছাত্র রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা। ফলশ্রুতিতে ছাত্ররাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে মেধাবীরা।

লেখক: বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাহিত্য সম্পাদক


সর্বশেষ সংবাদ