গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন: ফেসবুকে তোলপাড়
‘‘আমি ভাগ্যবান, নোয়াখালীর ভাইরাল ভিডিওটি আমাকে দেখতে হয়নি। ইউটিউব সম্ভবত সরিয়ে নিয়েছে। আমি দুর্ভাগা, এই দেশে একজন নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেও দিনের পর দিন আটকে রাখা যায়। থানা-পুলিশ-প্রশাসনের টনক নড়তে ৩২ দিন লেগেছে। ভিডিওটি ভাইরাল না হলে হয়তো এই দুর্বৃত্তরা আড়ালেই থেকে যেতো।গন্ডার প্রশাসন ৩২ দিন পর হলেও মাঠে নেমেছে, একটা পশুকে গ্রেপ্তার করেছে, বাকিগুলোকে খুঁজছে। আপাতত এটুকুই স্বস্তি। তবে এই পশুগুলোর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া স্বস্তি আসবে না।’’
সামাজিক যোগাযোগামাধ্যম ফেসবুকে এভাবেই স্ট্যাটাস লিখেছেন সাংবাদিক প্রভাষ আমিন। শুধু তিনি নয়, বিষয়টি এখন গোটা দেশের ফেসবুক অঙ্গণে তোলপাড়। প্রত্যেকেই এ ঘটনায় নিন্দা জানানোর পাশাপাশি দ্রুত বিচার নিশ্চিতের দাবি তুলেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন লিখেছেন, ‘যদি যৌনক্ষুধার জন্যই শুধু ধর্ষণ হয় তাহলে এই ভয়াবহ নির্যাতন করতে হয় কেন? ঘুরুক এই ভিডিও। তাকাইয়া দ্যাখ। শোন। তারপরেও যদি বুঝিস। যদি বুঝতে চাস।’
সাংবাদিক তুষার আবদুল্লাহ লিখেছেন, করোনায় তারুণ্যের স্বেচ্ছাসেবক বন্ধুরা আসুন এবার নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি। সংঘবদ্ধ হই। নিশ্চয়ই করোনা মোকাবিলায় মতো প্রকৃত রাজনীতিবীদ ও সরকারের দফতর আমাদের সঙ্গে যোগ দেবেন। নির্যাতিত নারী এবং তার পরিবারকে আইনী সহায়তা দিতেও আমরা পাশে দাঁড়াতে চাই।
উন্নয়নকর্মী গীতা অধিকারী লিখেছেন, মানুষ পৈশাচিকতায় যে কোন হিংস্র প্রাণীকে অনেক আগেই হার মানিয়েছে। কেউ কি ছিলো না মেয়েটার জন্য। এ কয়টা দানবের কাছে হার মেনে গেলো সবকিছু। বহুদিনের চলে আসা বিচারহীনতার সংস্কৃতি আমাদের আরেকটা বর্বর ঘটনার সাক্ষী করে দিলো। নোয়াখালী’র ভিডিওটি না চাইতেই সামনে চলে এসেছে। আমি মা এবং আমিও একজন নারী। রাগে ক্ষোভে ঘৃণায় নিজেকে মানুষ ভাবতেই লজ্জা হচ্ছে। এ অমানুষদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। না কি নতুন কোন ঘটনার আড়ালে এটিও ফাইল চাপা পড়ে যাবে!
প্রসঙ্গত, গত মাস তথা সেপ্টেম্বরের ২ তারিখে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে রাতের আঁধারে ঘরে ঢুকে এক গৃহবধূকে অপবাদ দিয়ে নির্যাতন করেছে একদল যুবক। সে সময় ঘটনার ভিডিওচিত্র ধারণ করেন তারা। পরে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়া হয়।