দেশে একমাত্র শিক্ষার্থী ছাড়া আর কারো জীবনের দাম নেই?
শিক্ষার্থীদের জীবন বাঁচাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে শিক্ষার্থীদেরকে ঘরে বসিয়ে রাখলেন। আর অনলাইনে সেমিস্টার চালু রেখে শিক্ষার্থীদের গার্জিয়ানকে টাকা উপার্জনের জন্য বাইরে যেতে বাধ্য করলেন।
ভার্সিটি কবে খুলবে সেটার সঠিক টাইম লিমিট না থাকায়, আমরা যারা অন্য শহরে পড়াশোনা করি তারা মেস/বাসা ছাড়তে পারছি না। ছয় মাস যাবত না থেকেও মাসে মাসে টাকা গুণতে হচ্ছে। এই টাকাটাও আমাদের গার্জিয়ানকে বাইরে গিয়েই ইনকাম করতে হচ্ছে।
খুব সহজে বলাই যায়, বাসাটা তাহলে ছেড়ে দিন। ছেড়ে দিলে যখন ভার্সিটি খুলবে, তখন এতো অল্প নোটিশে আমার থাকার উপযোগী বাসা কি আপনি খোঁজে দেয়ার দায়িত্ব নেবেন?
তারপর খাবার, পোশাক এসবের জন্যেও টাকাটা উপার্জন করতে হচ্ছে বাইরে গিয়েই। প্রতিটা ফ্যামিলিতেই এমন একজন আছেন, যাকে প্রতিনিয়ত বাইরে যেতে হয় রোজকার করতে। নিজের এবং পরিবারের বাকি সদস্যের জীবিকার তাগিদে।
তাহলে কি বলবেন, এই মানুষটির জীবনের দাম নেই? উত্তর যদি আছে হয়, তাহলে উনার বাইরে না গিয়ে উপায় কি?
উপায় একটাই: সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকুক, সকল অফিস, আদালত, কারখানা, যানবাহন বন্ধ থাকুক। দেশ করোনাশূন্য হওয়ার আগ পর্যন্ত সারাদেশ লকডাউনে থাকুক। অন্যান্য দেশের মতো সরকার জনগণের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিক। শর্ত সবার জন্য সমান হোক। তখন সঠিক বিচার হবে।
যদি বলেন আমাদের দেশের সরকারের এতো বিশাল সংখ্যক জনগণের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেয়ার সামর্থ্য নেই, নিজ পরিবারের দায়িত্ব নিজেই নিতে হবে। তবে বলবো, আমার ফ্যামিলির গার্জিয়ান বাইরে রোজকারে গিয়ে আক্রান্ত হলে, আমিও আক্রান্ত হবো। তাহলে আর আমার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে লাভ কি?
যে শিক্ষার্থীদের জীবন বাঁচাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে, তাদের ৮৫% শিক্ষার্থীই কোনো স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে করোনাকালীন বন্ধকে বসন্তকালীন বন্ধ ভেবে বিন্দাস ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে বললে, এই ৮৫% এরই একাংশ করোনার অজুহাত দেখাচ্ছে।
আচ্ছা আরেকটা কথা, কওমি মাদ্রাসায় কি করোনা নেই? না, কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জীবনের দাম নেই? নাকি কওমি মাদ্রাসা কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না? এ কেমন বিচার।
লেখক: শিক্ষার্থী, কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, লিডিং ইউনিভার্সিটি