করোনার পরে রাষ্ট্রব্যবস্থাকে বদলাতেই হবে
করোনা উত্তরণকালীন এবং করোনা উত্তরকালে রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে বদলে যেতে হবে। বদলাতেই হবে। লাখ লাখ মানুষ, আসলে কয়েক কোটি, এতোদিন যারা নানাকিছু করে বেঁচেবর্তে ছিল, তারা এ লকডাউন এবং পরের অর্থনৈতিক মন্দায় পুরোপুরি বেকার বা একেবারে ফতুর হয়ে যাবে।
মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত অনেক মানুষ চরম দরিদ্র হবে, দরিদ্ররাতো চরম দরিদ্র অবশ্যই। এ মানুষগুলো কীভাবে বাঁচবে? ব্যক্তিগত বা সামাজিক চ্যারিটি খুব বেশিদিন তাদের বাঁচিয়ে রাখতে পারবে না। বিশ্বজুড়েই যে মন্দা আসছে তাতে এনজিওরাও তহবিলের অভাবে খুব বেশিকিছু করতে পারবে বলে মনে হয় না। রাষ্ট্রই হবে তাদের একমাত্র অবলম্বন। সেই রাষ্ট্রকে এ ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থা টিকিয়ে রেখেই সামাজিকভাবে এক ধরনের সমাজতান্ত্রিক বিতরণ ব্যবস্থায় যেতে হবে।
বর্তমান আমলাতন্ত্র দিয়ে সেটা সম্ভব নয়, সম্ভব হলে কল্যাণমুখি রাষ্ট্র গঠনের উদ্যোগের সুপারিশ করতাম। সেটা হবে না বলেই পার্টিনির্ভর সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার কথা বলছি। বিশেষ করে ছাত্রসংগঠনকেন্দ্রিক কর্মী (সমাজতন্ত্রে যাকে পার্টি ক্যাডার বলা যেতে পারে) দিয়ে সেটা হতে পারে। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো পঁচেগলে গেলেও, ছাত্রসংগঠনেও তার প্রভাব থাকলেও; একমাত্র ছাত্র-তরুণকর্মীদের দিয়েই কিছু করা সম্ভব।
বলছি না যে তারা লঙ্গরখানা পরিচালনা করবে। কিন্তু, তাদের দিয়ে গরিবদের বাঁচার ব্যবস্থার পাশাপাশি কৃষি ও শিল্পে ব্যাপকভিত্তিক সমবায় ও আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে অর্থনীতির পুনর্জাগরণ ঘটানো যাবে। করোনাভাইরাস থেকে এখন বাঁচার পাশাপাশি পরেও বেঁচে থাকার ব্যবস্থার কথা ভাবা জরুরি। আপনি যদি একে সমাজতন্ত্র না বলতে চান তাহলে বইলেন না, কল্যাণরাষ্ট্র বলতে চাইলে তাই বলুন; কিন্তু বেঁচে থাকার ও বাঁচিয়ে রাখার পথ ও পদ্ধতি দ্রুত ঠিক করে ফেলুন।