০৭ মে ২০২০, ২১:০০

রোজা আসলো, কিন্তু ওই দিনগুলো এলো না

আবরার ফাহাদ ও আবরার ফাইয়াজ  © ফাইল ফটো

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগের নির্মম নির্যাতনে নিহত ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন তার ছোটভাই কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী আবরার ফাইয়াজ।

স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘‘গত বছর রোজার এই সময় ঢাকাতেই ছিলাম দুই ভাই। এই সময়ে কোনো এক কারণে আমার মন খুব একটা ভালো ছিলো না। ঈদের আগে কুষ্টিয়াতে চলে আসবো দুজন। ঈদের কেনাকাটা করবো, ভাইয়া বলল শাহবাগ চলে আই। আমি গেলাম; গিয়ে ভাইয়াকে খুঁজে পাচ্ছি না। কল দিচ্ছি ধরছে না। আজিজের সামনে চুপচাপ দাঁড়ায়ে আছি। ভাবছি কি করবো। আর আমার ছোট থেকেই একা একা কোথাও থাকলে কেন যেন মন খারাপ হয়ে যায়।

হঠাৎ দেখলাম ভাইয়া অনেকটা দৌড়ে আসছে। এসে বলতেছে; টাকা তুলতে পারছিলাম না দেরি হইছে তাই। ঐ তিনদিনে আজিজ, এলিফ্যান রোড আর নিউ মার্কেট এর এমন কোনো দোকান মনে হয় ছিল না, যেটাতে গেছিলাম না। প্রথম দিন ইফতার এর সময়, আমি অবশ্য রোজা ছিলাম না। ভাইয়া রোজা থেকেই সারাদিন ঘুরছিল আমার সাথে। শুক্রবারে ঈদের আগে কি পরিমাণ ভিড় হয় তা তো জানিই। ভাইয়া আর দাড়াতে পারছিল না। বলল চল স্টার এ যায়; ইফতার করবো। কিন্তু একটা জায়গাও ফাকা ছিলনা।

ঘরোয়াতে গেলাম ঢুকার মতো উপায় নাই। বাইরে এসে এক বোতল লেবুর শরবত কিনে স্টারের সামনের মসজিদে ঢুকলাম। বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে, নামায পরে ফাকা হলে যাতে ইফতার করা যায়। তারপর একটু রেস্ট নিয়ে আবার কি যেন কিনতে চলে গেলাম। ঐ রকম খারাপ সময়েও ঐ দিন পুরো সময় হাসছিলাম মনে আছে। আর ভাইয়া বলছিলো মন খারাপ করিস না। ঐ কলেজ বাদেও তো সবাই ভালো রেজাল্ট করে তাই না। এখানে ভর্তি হ,আমার পাশে থাকবি। দুই জন থাকবো এটাই ভালো হবে। কয়দিন পর আম্মুকে নিয়ে আসবোনে।

একটা বছর কেটে গেলো; আবার রোজা আসলো, কিন্তু— ঐ দিন গুলো আর আসবে না। ৭মাস। ভালো থাক এইটাই এখন শুধু চাওয়ার আছে।''