কাক নাকি কাকের মাংস খায় না, সাংবাদিকরা ঠিকই খায়
কাক নাকি কাকের মাংস খায় না। তবে বাংলাদেশের সাংবাদিকরা ঠিকই সাংবাদিকদের মাংস খায়।প্রথম আলোর সম্পাদকের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারীর ঘটনায় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের নিরবতায় তা আবারো প্রমাণিত হলো। কিশোর আলোর আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে নাইমুল আবরারের মৃত্যুর ঘটনার পরে সরকারের বিভিন্ন মানুষের বক্তব্য ও সরকারের শ্রেণী চরিত্র দেখে একটা গাধারও বোঝার কথা এ মামলায় কেন প্রথম আলোর সম্পাদককে জড়ানো হয়েছে? এটি করা হয়েছে প্রথম আলোর স্বাধীন সাংবাদিকতার টুটি চেপে ধরার জন্য, অন্য সংবাদপত্রগুলোকে আরো বেশী আতংকে অবশ করে রাখার জন্য।
না হলে অন্য ঘটনাগুলোতে এমন মামলা হয়না কেন? মাত্র কিছুদিন আগে ভিআইপির যাতায়াতের জন্য ফেরী থামিয়ে রাখার ঘটনার একজন কিশোরের মৃত্যুর জন্য সেই ভিআইপির বিরুদ্ধে মামলা হলো না কেন? কিশোর আলোর আয়োজিত ঘটনায় দুর্ঘটনাবশত আবরারের মৃত্যুর জন্য যদি প্রথম আলোর সম্পাদকের বিরুদ্ধে হত্যার মামলা হয় তাহলে চট্টগ্রামের সাবেক মেয়রের কুলখানির ঘটনায় পদদলিত হয়ে ১০ জনের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হলো না কেন?
জেনে বুঝে অব্যবস্থাপনা বজায় রাখার কারনে নৌ, রেল আর সড়কপথে হাজার হাজার মৃত্যুর জন্য মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়না কেন? বুয়েটে বা অন্য কিছু শিক্ষাঙ্গনে হত্যার ঘটনায় ভিসি, প্রভোষ্ট, প্রক্টর আর ছাত্রলীগের মূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মামলা হয় না কেন?
সাংবাদিক নেতাদের/সিনিয়র সাংবাদিকদের সব বোঝার কথা। কিন্তু না বোঝার ভান করে তাদের অনেকে চুপ করে আছেন। কেউ কেউ এমনকি নানাকৌশলে ইন্ধনও দিচ্ছেন সুবিধা পাওয়ার আশায়। কেউ আছেন ভয়ে চুপসে। সাংবাদিক নেতার মুখোশে থেকে আপনারা আসলে শুধু নিজের স্বার্থ দেখছেন। বাংলাদেশে সংবাদপত্র শিল্পে বর্তমান দুরাবস্থার জন্য আপনাদের হানাহানি, লোভ আর ক্ষুদ্রতা দায়ী।
লেখক: অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়