১৬ জানুয়ারি ২০২০, ২১:০৭

আমাকে লাইফ সাপোর্টে পাঠিয়ে হামলাকারীদের পুরস্কৃত করা হয়েছে

তুহিন ফারাবী

মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের ৪ হামলাকারীর আগাম জামিন মঞ্জুর হওয়ায় অবাক হওয়ার কিছুই নেই। এই রাষ্ট্রের কাছে আমি কখনও বিচার চাইবো না, আমাকে যারা লাইফ সাপোর্টে পাঠিয়েছিল তাদেরকে শাস্তির বদলে পুরস্কৃত করেছে এই রাষ্ট্র।

আমাকে যখন আইসিউতে থাকাবস্থায় গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা ও গণমাধ্যম কর্মীরা প্রশ্ন করেছিলেন আমি নির্দিষ্ট কারও বিচার চাই কিনা?

আমি তখন বলেছিলাম কার কাছে বিচার চাইব? বিচার আদৌ পাওয়া যাবে এই ব্যর্থ রাষ্ট্রে? আমার কথা শুনে উনারা চুপটি মেরেছিল। কারণ উনারাও জানতো, আইওয়াশ করা এবং পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য তাৎক্ষণিক ৩ জনকে গ্রেফতার করা হলেও তাদেরকে পরবর্তীতে পুরস্কৃত করা হবে।

হয়তো এর চেয়েও বড় পদবীতে আসীন করা হবে তাদের। এই মনোবল ও বিশ্বাস সেই সন্ত্রাসীদের মাঝে ছিল বলেই তারা প্রকাশ্যে মিনি পার্লামেন্ট খ্যাত ডাকসুতে দরজা লাইট বন্ধ করে ডাকসুর নির্বাচিত ভিপিসহ আমাদের প্রায় ৩০ জন সহযোদ্ধাকে রক্তাক্ত করেছিল।

ওরা ভেবেছিল আমরা কয়েকজন মারা গেছি। যাওয়ার সময় তাদের মাঝে কেউ একজন বলেছিল ‘মনে হয় নুরসহ ৩/৪ জন মরেই গেছে, চল আর লাগবেনা কাজ হইছে’।

সেই সশস্ত্র সন্ত্রাসীদেরকে সকল তথ্য উপাত্ত থাকা স্বত্বেও আজ তাদের জামিন দেয়া হয়েছে। বাহিরেও ঘুরছে তারা। আমি সত্যিই কারো কাছেই বিচার চাইবো না।

যে দেশে রাজিবকে প্রকাশ্যে হত্যাকারীদের এই রাষ্ট্র মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়; যেই দেশে আবরারের হত্যাকারীদেরকে রাষ্ট্র পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ করে দেয়; যেই দেশে তনুর মায়েরা কান্না করতে করতে চোখের জ্বল শুকিয়ে ফেলে; সেই দেশে আমি তুহিন ফারাবীকে লাইফ সাপোর্টে পাঠানো তো খুবই নগণ্য বিষয়।

আমি শুধু এইটুকু বলব, সকল অন্যায় অবিচারের শেষ রয়েছে। আমি এই দেশের জনগণের কাছেও আজ আর বিচার চাইবো না। আল্লাহর উপর সকল অন্যায় অবিচার নির্যাতন নিপীড়নের বিচার চাইছি। আমার বংশে বেশ কয়েকজন ফ্রিডম ফাইটার রয়েছে, আমাকে ব্লেম দেয়া হয়েছে আমি স্বাধীনতাবিরোধী।

আমার আজ বলতে হচ্ছে,

হে ৫৬-হাজার বর্গমাইলের প্রাণের দেশ,
আমি লজ্জিত- তোমার গর্ভে জন্মেছি।


লেখক: শিক্ষার্থী ধানমন্ডী চার্টার্ড ইউনিভার্সিটি ও যুগ্ম-আহ্বায়ক, ছাত্র অধিকার পরিষদ