‘এ্যাম্বুলেন্সেও কথা বলছিল আবরার’
ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র আবরার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনায় অনেকের মনে অনেক প্রশ্ন যেগেছে। তাদের মধ্যে একজন আমিনুল ইসলাম। আমিনুল ইসলাম তার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্য ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে লিখেছেন আবরারকে যখন অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছিল তখনও কথা বলছিল আবরার।
কেন আবরারকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে না নিয়ে মহাখালীতে নিয়ে যাওয়া হল এমন প্রশ্নও করেছেন তিনি। নিচে আমিনুল ইসলামের স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হল।
একটা ছেলে মারা গিয়েছে, অথচ আপনারা জানতেন'ই না?
গতকাল ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের এক ছাত্র মারা গিয়েছে প্রথম আলো'র আয়োজন করা অনুষ্ঠানে গিয়ে।
ছেলে'টা আপনাদের অনুষ্ঠান চলাকালে'ই বিদ্যুতায়িত হয়েছে। সে কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে মরে যায়'নি। বেঁচে ছিল। আপনারা তাকে মহম্মদপুর থেকে এ্যাম্বুলেন্সে করে মহাখালী'তে কেন নিয়ে গেলেন?
আমি নিজে ওই কলেজের ছাত্র ছিলাম? সেখানে তো দেশের নামকরা একটা মেডিকেল আছে। এছাড়াও আরও নানান সব মেডিকেল আছে।
সেখানে না নিয়ে গিয়ে আপনারা তাকে মহাখালী'তে কেন নিয়ে গেলেন?
ছেলেটা কিন্তু এ্যাম্বুলেন্সেও কথা বলছিল। মহাখালী'তে নিতে নিতে তার প্রাণ'টাই চলে গেল।
ছেলেটা মারা গিয়েছে গতকাল দুপুর দু'টার দিকে। তখনও আপনাদের অনুষ্ঠান চলছিল। একটা ছেলে এভাবে মরে গেল, এই খবর গোপন রেখে কি করে আপনারা অনুষ্ঠান চালিয়ে গেলেন?
এখন আবার দেখছি আপনারা আপনাদের ফেসবুক পেইজে নানান সব যুক্তি উপস্থান করছেন।
এই সব যুক্তি'র কোথাও পেলাম না- কেন আপনারা তাকে মহাখালী'তে নিয়ে গেলেন?
এই প্রশ্নের উত্তর কে দেবে?
এছাড়া আরও কিছু প্রশ্ন আছে
-আপনারা বলছেন, ছেলেটা যে মরে গিয়েছে এই খবর আপনারা জানতেন না; জানলে অনুষ্ঠান চালিয়ে যেতেন না।
রিয়েলি?
একটা ছেলে আপনাদের অনুষ্ঠানে এসে বিদ্যুতায়িত হয়ে মরে গেল; আপনারা জানতেনও না? আপনাদের খোঁজ নেবারও প্রয়োজন পড়লো না?
নাকি জেনেও এখন না জানার ভান করছেন? দুটো'ই তো অপরাধ।
আরেকটা প্রশ্ন
-ছেলেটা তো গতকাল দুপুর দু 'টার দিকে মারা গিয়েছে।
এই মৃত্যু'র ঘইতনা তো এমনিতে'ই পত্রিকায় চলে আসার কথা। গতকাল পুরো দিন, পুরো রাত চলে গেল, আপনাদের পত্রিকার কোথাও এই খবর পেলাম না কেন?
আপনাদের তো অন লাইন ভার্শন আছে। কই, সেখানে তো কোন খবর দেখলাম না এই নিয়ে?
আজ কেন তাহলে এই নিয়ে খবর করেছেন?
এখন আমরা লিখছি বলে? নইলে দিব্যি চেপে যেতেন, তাই না?
যাও আবার লিখছেন, পড়ে মনে হচ্ছে খুব স্বাভাবিক ঘটনা! এখানে আপনাদের কোন দায়'ই ছিল না!
কি অবাক কাণ্ড!
দেখুন আপনারা তিনটা অন্যায় করেছেন। ছেলেটা বিদ্যুতায়িত হবার পর তাকে পাশের মেডিকেলে না নিয়ে গিয়ে আপনারা অন্যায় করেছেন। ছেলেটা মরে গিয়েছে, এই খবর গোপন করে আপনারা অন্যায় করেছেন। মরে যাবার পর অনুষ্ঠান চালিয়ে গিয়ে আপনারা অন্যায় করেছেন।
আপনারা ভুল করেছেন কিংবা অন্যায় করেছেন; এখন এটার হয়ে সাফাই গাইছেন কেন?
বাংলাদেশের ব্যাপারটাই এমন, ভুল করে, অন্যায় করে স্বীকার করে না, ক্ষমা চায় না; উল্টো সাফাই গায়। ভাবখানা এমন, স্বীকার করা, ক্ষমা চাওয়াটা'ই বরং অন্যায়।
এই জন্য'ই এই দেশে অন্যায় গুলো জমে জমে পাহাড় হয়ে যায়।
আপনারা ভুল করেছেন, অন্যায় করেছেন। এর সাফাই না গেয়ে বরং ভুলটা স্বীকার করে বলুন- আমাদের ভুল হয়েছে, আমরা ক্ষমা প্রার্থী।