আবরার মরলো কেন?
বুয়েটের হতভাগ্য ছাত্র আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে গতরাতে। পারিপার্শিক সকল আলামতে এটি স্পষ্ট যে খুনটা করেছে বুয়েট ছাত্রলীগের কিছু নেতা কর্মী। কেন খুন করা হলো আবরারকে?
ভারত-বাংলাদেশে অসম সম্পর্ক নিয়ে কিছু প্রশ্ন তোলার কারণে? শিবির করার কারণে? এসব কারণে কাউকে হত্যা করার সুযোগ কি আছে বাংলাদেশের কোন আইনে? ছাত্রলীগকে কাউকে পেটানোর বা হত্যা করার অধিকার কি দেয়া হয়েছে কোন কেতাবে?
এসবের উত্তর হচ্ছে, না। কেউ ভারতের সমালোচনা করলে, সরকারের ভারতনীতির সমালোচনা করলে, ভিন্নমত পোষন করলে এমনকি কেউ শিবির করলেও একারণে তাকে হত্যা, অত্যাচার, আটক বা পুলিশের কাছে সোপর্দ্ করার অধিকার নেই ছাত্রলীগের ( বা অন্য কারো)। অথচ এরকম কাজ বহুবার করেছে তারা গত দশ-বারো বছরে।
আববার হত্যার বিচার অবশ্যই করতে হবে। হত্যাকারীদের বিচার করে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে। আর না হলে কেউ ভিন্নমত পোষন করলে বা দেশের পক্ষে কিছু বললে ছাত্রলীগ তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলতে পারবে-এমন একটা আইন করতে হবে এদেশে!
যে পোস্ট দেয়ার কারণে হত্যা করা হয়েছে আবরারকে তা হাজার হাজার শেয়ার করুন। প্রশ্ন তুলুন নিজের দেশের পক্ষে কথা বলার ‘অপরাধে’ মেরে ফেলার সিস্টেমটা কে বা কারা চালু করেছে এদেশে? কারা ছাত্রলীগকে দিয়ে করাচ্ছে এসব? কাদের নির্দেশে চলে এখন ছাত্রলীগ?
আবরারের জন্য দোয়া করুন। দেশের জন্য, মানুষের জন্য কথা বলার এই মৃত্যু-কে বৃথা যেতে দিবেন না। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যারা থাকবে তাদের মুখোশ উন্মেচন করুন। এটাই মুক্তিযুদ্ধের আসল চেতনা।
লেখক: অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়