সবার স্বপ্ন বাড়ি যায় না!
আপনার স্বপ্ন হয়তো বাড়ি যাচ্ছে নাড়ির টানে! নাড়ির টান সবারই আছে কিন্তু লক্ষ লক্ষ মানুষের স্বপ্ন বাড়ি না গিয়ে ঢাকার এই ইট পাথরের চার দেয়ালেই বন্দি থাকে। কারো কলকারখানায় যন্ত্রের নিচে কাটা পরে স্বপ্ন।
নয়তো রিক্সার প্যাডেল ঘুরায় নাড়ির স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে। যখন আপনি গুলশান বনানী,বসুন্ধরা, ধানমন্ডি উত্তরায় ৪০/৫০ হাজার টাকা ব্যয় করছেন বাড়ি ভাড়ায়! তখন এই শহরের কোটি মানুষ ১৫/২০ হাজার টাকা ইনকাম করতে জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
তাদের আবার কিসের স্বপ্ন? আর স্বপ্নই বা বাড়ি যাবে কিভাবে? স্বপ্নকে বাচিয়ে রাখতে নাড়ির মুখে অন্য দিতে তাকে যে এই যান্ত্রিক শহরে থাকা চাই চাই। মধ্যবিত্তের হাজারো স্বপ্ন থাকে সাধ্য কতোটুকু থাকে?
মধ্যবিত্ত একজন পরিবারের বাবা ছেলে মেয়ে স্ত্রী কাছের আত্তীয়দের কিছুনা কিছু কিনে দিয়ে নিজের জন্য একটা পাঞ্জাবি বা গেঞ্জি কেনার টাকা পকেটে আর থাকে না। থাকলেও সেটা খরচ করে না।কারন ঈদের দিনে ছেলে মেয়ের হাতে কিছু টাকা না দিলে হয়?
নিজের দুবছর আগে কেনা পাঞ্জাবীটা রঙ বিবর্ন হয়ে গেছে সেটাই আবার ধুয়ে একটু ৫ টাকায় আয়রন করেই ঈদ টা কাটিয়ে দেয়। তবুও তাদের মুখে হাসি থাকে প্রিয়জনকে কিছু দিতে পারে বলে।
এই শহরে হাজারো যুবক আমি চিনি। এরকম লক্ষ লক্ষ আছে যারা জীবনে কখনো ব্লেজার পরেনি, কখনো ভাল জুতো শার্ট প্যান্ট কেনা হয়নি।ইচ্ছে নেই এমন নয়!
বাবা মা, ভাই বোনের খরচ যোগাতেই যে যুবকেরা হিমশিম খায় তাদের আবার বিলাসিতা কিসে? হয়তো ক্যাটস আই কিংবা এপেক্স থেকে প্রতি ঈদেই কিনবে ভাবে, কেনার ইচ্ছেতে শোরুম গুলায় ঘোরে।
দামে কুলাতে পারেনা। মন কে শান্তনা দেয় এদের মডেল ভাল না। ফুটপাতে ভ্যানের উপর থেকে একটা কিছু কিনেই বছরের পর বছর কাটায়।
ওহে তোমরা যারা দামি শোরুম থেকে মার্কেট করে চেক ইন দাও! সেই যুবকের মনের ভিতরে যে ঝড় বয়ে যায় সেকি তোমরা জানো? কতোজনের স্বপ্ন গুলো শহরের গাড়ির নিচে পিষ্ট হচ্ছে। জুতোর তলায় পিষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
গত বছরের কথা। এক মধ্যবিত্ত চাকুরীজীবির মোবাইলে কথা বলা শুনেছিলাম। সে আফসোস করে বলছে! ঈদে বাড়ি যাবো কিভাবে?
বাড়ি যাবার টাকা নাই। কোনমতে বাবুর জন্য ৩০০ টাকায় একটা জামা কিনে পাঠাইছি। কথাগুলো সে খুব সহজে ওপারের মানুষটিকে বলেছিল। কিন্তু কথাটার ভারত্ব কষ্ট আমাকে এতো বেশি ব্যাথিত করেছিল সে রাত আমি ঘুমাতে পারিনি।
স্বপ্নগুলো সবার দুয়ারে আসুক।
সবার স্বপ্ন বাড়ি যাক।
সবাই নাড়ির সাথেই ঈদ করুক।
ঈদ মুবারাক।
(লেখকের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)