০৯ আগস্ট ২০১৯, ০১:০১

অপরাধ বিরোধী তারুণ্য

নাজমুল হুদা  © ফাইল ফটো

আমিও স্বপ্ন দেখি, আমার স্বপ্নেও এ বাঙলা জেগে ওঠে। আমার স্বপ্নে কোন অপরাধীর স্থান এখানে হতে পারে না। নিজ থেকে পরিবার, পরিবার থেকে সমাজ কোথাও কোন অপরাধীর আবাসস্থল হতে পারে। অপরাধী ব্যক্তির দোষী ছাড়া কোন আলাদা পরিচয় থাকতে পারে না।

মহামারি ধর্ষণের একালে ‘এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম’ প্রতিধ্বনিতে বেজে উঠে তারুণ্যের সংগ্রাম, যে সংগ্রাম ধর্ষকের বিরুদ্ধে।

আমি তরুণ। আমি বিশ্বাস করতে চাই এ দেশের সব কিছুই আমাকে কেন্দ্রিক। আমি অনুরাগে ফুল দিতে জানি আবার সেই আমিই ক্ষিপ্র রাগে ফুলের কাঁটা দিতেও পিছপা হই না। কারণ আমি তরুণ।

আমার হাত দিয়েই দুরন্ত পথে উড়ন্ত বেগে চলবে দেশ, সেই আমার হাত দিয়েই ধ্বংস হবে সোনার দেশ। আমি পারি মায়ের মুখে হাসি ফুটিয়ে মাথায় উপরে আঁকড়ে ধরতে, সেই আমিই পারি আমার মাকে ছোট্ট ছোট্ট ব্যথায় ব্যথিত করতে।

কাম-বাসনাকে বিসর্জন দিয়ে স্রষ্টায় দ্রষ্টা হওয়ার গুন আমার মধ্যেও আছে। তবে ওদিকে স্রষ্টার সৃষ্টি ভুলে ৭ বছরের শিশুর সাথে নৃশংস ঘটনা ঘটার লক্ষণও আমার বিবেককে নাড়ায় না। কারণ আমি এখনও তরুণ।

সভ্য কাজে সবার আগে এগিয়ে আমি, আবার অসভ্য কাজেও সকলকে হারিয়ে দিতে জানি।

বৃক্ষে বৃক্ষে দেশকে সবুজ রঙে রাঙাতে আমার থেকে কেও ভালো জানে না। সেই গাছগুলো মাটি ছাড়া করতে কেও আমার আগেও না। কারণ কেও তো নাই আমায় করার মত বারণ! আমি উজ্জ্বল বাঙলার এক তেজোময় তরুণ।

আমি অন্ধকার রাতে আগুন দিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে কাজী নজরুলকে পড়তে জানি। সেই আমিই কিন্তু সেই প্রদীপে দেশটাকে পুরে ছন্নছাড়া করতে পারি। আমি সবই পারি, কেননা আমি তো সেই তারুণ্যের অধিকারী।

আমি তরুণের ছায়া। আমার ছায়ার আছে বলিষ্ঠ দেহ, পুষ্পসুবাস মন, নৈতিক বিবেক।  বলিষ্ঠ দেহের সাথেও নৈতিকতা জাগ্রত করে দেশ ও দশের কল্যাণে মনকে প্রশস্ত করাই আমার ছায়ার সার্থকতা।

অন্যথায় আমি কলঙ্কিত। আমার মা কলঙ্কিত। আমার সমাজ, আমার রাষ্ট্রও এর থেকে বাকি থাকবে না।

আমার দেশের মাটিকে সোনার থেকেও দামি খাটি করতে, সকল তারুণ্যের ছোঁয়ায় দেশকে রাঙাতে, দেশকে ভালোবাসতে, তারুণ্যকে তার মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে আমিও স্বপ্ন দেখি।

সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে জ্ঞানকে সমৃদ্ধ ও বিবেককে জাগ্রত করার প্রত্যয়ে তরুণ প্রতীককে বরণ করার স্বপ্ন দেখি। কারণ আমি আমাকে ভালোবাসি। আমি আমার বাঙলাকে ভালোবাসি। আমি ৫২, ৭১ কে ভালোবাসি।

তারুণ্যের জয়, বাংলাদেশের জয়।

লেখক: শিক্ষার্থী সরকারি তিতুমীর কলেজ