ডেঙ্গু: প্রতিরোধ ও জনসচেতনতায় জোর দিন
ডেঙ্গু মহামারী আকারে প্রাদুর্ভাব যেভাবে প্রাণনাশ করছে মানুষের জীবন আজ হুমকি স্বরুপ। বিভিন্ন সংবাদে ডেঙ্গু জ্বর আক্রান্ত রোগীদের তথ্য জানা যাচ্ছে। অনেক হাসপাতালে অতিরিক্ত রোগীর চাপে কারণে আসন সংকট আরেকটা ক্রাইসিস তৈরি হচ্ছে। এইযে জাতীয় দুর্ভোগ, এটা কি একদিনের সৃষ্টি? না, রাতারাতি সারাদেশে এই সংকট তৈরি হয়নি।
বর্ষার মৌসুম আসলে এডিশ মশা দ্রুত ডেঙ্গু জ্বর ছড়ায় এই তথ্য নতুন নয়। তাহলে যাদের দায়িত্ব মশা নিধন অভিযান পরিচালনা করা এবং মশার বংশ বিস্তার রোধ করা তাদের কর্তব্য ও দায়িত্ব নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক। এমনকি সচেতনতার জন্য প্রয়োজনীয় প্রচারণা যা দরকার ছিলো সেটাও কম ছিলো।
ডেঙ্গু জ্বর কেন হয়, লক্ষণ কী কী, প্রতিকার কী, প্রতিরোধ কী? এসব বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে অবহেলা করা কোনভাবেই কাম্য নয়। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দ্রুত জনসচেতনতা করা যায় খুব সহজে। একজন ছাত্রের যখন ডেঙ্গু জ্বর দেখা দেয় তখন এর প্রাসঙ্গিক তথ্য গুলো জানাতে হবে। তখন সে তার পরিবারকে বুঝাতে পারবে, পরিচিত জনকে বলতে পারবে। সেজন্য ক্লাসে শিক্ষক এডিশ মশা ও ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে কয়েক মিনিট প্রচারণা করলে দ্রুত সুফল পাওয়া যাবে।
একইভাবে বিভিন্ন অফিসে এই বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে অফিসের প্রধান উদ্যোগী হয়ে কর্মসূচী নিলে দ্রুত পরিস্থিতি উন্নয়ন হবে। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে প্রতিকার ও প্রতিরোধ এর জন্য জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করা উচিৎ। মাইকিং করে, লিফলেট বিতরণ করে সর্বস্তরের মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এগিয়ে আসা উচিত।
অভিজাত এডিশ মশা স্বচ্ছ পানিতে বংশ বিস্তার করে। সুতরাং শুধু নোংরা পানি, আবর্জনা পরিষ্কার করলেই হবে না, স্বচ্ছ পানি যাতে জমে না থাকে সেদিকে খুব খেয়াল রাখতে হবে। আর পরিপূর্ণ সমাধান নিয়ে ভাবতে হবে। নগর পরিচ্ছন্ন রাখলে উপকারের শেষ নেই। পরিচ্ছন্ন শহর ও গ্রাম বিভিন্ন রোগ বালাই থেকে সুরক্ষা দিতে পারে।
নিজ উদ্যোগে ব্যক্তিগত বাড়ি, ফ্লাট, অফিস পরিষ্কার রাখলে গোটা বাংলাদেশ পরিষ্কার হয়ে যাবে। নিশ্চয়ই জানেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। সুতরাং নিজে পরিষ্কার থাকি, চারপাশ পরিষ্কার রাখি।
লেখক: প্রভাষক, হিসাববিজ্ঞান, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ