ভালো মানুষের অন্তরালে ভালো শিক্ষক
বলা হয় মা বাবার পরেই যার অবস্থান তিনি শিক্ষক। মানুষ গড়ার কারিগর হলো শিক্ষক। অর্থাৎ ভাল মানুষ তৈরি করা হলো শিক্ষকের কাজ, শিক্ষার কাজ। বিষয়টা বলা যতটা সহজ বাস্তবতা ততটা কঠিন। অন্যকে ভাল করতে হলে প্রথমে নিজে ভাল হতে হয়। একজন শিক্ষকের অন্যতম বড় গুণ হলো ভালো মানুষ হওয়া। শিক্ষক যেকোনো স্থানে তিনি শিক্ষক। তিনি সমাজের নেতা।
শিক্ষা ও গবেষণায় মনোযোগ থাকা চাই। সুন্দর বাচনভঙ্গি ও ব্যক্তিত্ব দিয়ে সবার অনুসরণীয় এবং অনুকরণীয় হতে হয় একজন শিক্ষককে। একজন শিক্ষকের সব জানতে হবে এমন নয়; তবে যা জানবে তা যেন সত্য ও ঠিক হয়।
স্থান কাল পাত্রভেদে জ্ঞান বিতরণের পদ্ধতি হতে হবে আকর্ষণীয় ও সুখকর। শিক্ষকতা হলো ব্রত। একে ভালবেসে লালন করতে হয়। অনেক অভাবের ভিতরেও সন্তুষ্ট চিত্তে শিক্ষার্থী ও সমাজের স্বপ্নদ্রষ্টা হতে হয়। শিক্ষক হলো দার্শনিক। তার দর্শন সমাজ দেশের উৎকর্ষ সাধনে কাজে লাগবে। যুক্তি দিয়ে তিনি কুসংস্কার দূর করবেন। জ্ঞানের আলো চারদিকে ছড়িয়ে দিবেন। সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে অবদান রাখবেন সবসময়। শিক্ষক ধৈর্যশীল হয়ে তার দায়িত্ব পালনে সদা ব্যস্ত থাকবেন। যাহোক ভালো শিক্ষক হতে অনেক গুণাবলির সমন্বয় চাই।
তেমনি ভাল শিক্ষার্থীর রয়েছে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য। সবছাত্র মেধাবী হবে তা নয়; কিন্তু পড়াশোনা করে ভালো মানুষ হবে এটা শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য। শিক্ষার্থী নৈতিকতা ও মূল্যবোধ শিখে নিজের আচরণ সুন্দর করবে, নিজেকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে এটাই কাম্য।
অধ্যয়ন ও জানার আগ্রহ, শ্রদ্ধাবোধ, সহমর্মিতা, নমনীয়তা, শিক্ষকের অনুগত থাকা, কৃতজ্ঞতাবোধ ইত্যাদি ভালো শিক্ষার্থীর থাকা চাই। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সম্পর্ক খারাপ হলে কখনো আদর্শ শিক্ষা সম্ভব নয়। শিক্ষক শিক্ষার্থীর কল্যাণে সজাগ থাকবে, তেমনি শিক্ষার্থী তার গুরুজনের প্রতি বাধ্য ও বিনয়ী থাকবে।
রাজনীতি, নীতি নৈতিকতার অভাব, অপসংস্কৃতি, শিক্ষাবাণিজ্য, পারস্পরিক উদাসীনতা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে শিক্ষক শিক্ষার্থীর সম্পর্ক নেতিবাচক হচ্ছে; যা জাতির জন্য অশনিসংকেত। অভিভাবক ও রাষ্ট্রের সর্বদা খেয়াল রাখতে হবে শিক্ষক শিক্ষার্থীর সম্পর্ক যেন নেতিবাচক না হয়। এক্ষেত্রে সবমহলের অবদান রয়েছে। সুন্দর সমাজ, সভ্য জাতি তৈরিতে সবার সচেতন অংশগ্রহণ করা চাই।
[লেখক: প্রভাষক, হিসাববিজ্ঞান, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ]