প্রশ্ন ফাঁসমুক্ত প্রাথমিক পরীক্ষা: তরুণরা জাগলে সব হয়
১ম ও ২য় ধাপে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় যখন একেরপর এক প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটে, তখন পরীক্ষার্থীরা হতাশ হয়ে আমাদেরকে অনুরোধ করে কিছু একটা করার জন্য।
মূলত ভুক্তভোগীদের অনুরোধেই আমরা আন্দোলনে নেমেছিলাম। আমাদের সংগঠনের ব্যানারে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছে অনেক ভুক্তভোগী। এছাড়া মিডিয়াতেও উঠে আসে প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ। গণমাধ্যম, শিক্ষার্থী, ভুক্তভোগী সকলের সম্মিলিত প্রতিবাদ পৌঁছে যায় কর্তৃপক্ষের কাছে। যেকারণে ৩য় ধাপে পরীক্ষা নিতে তারা অনেক সতর্ক ছিলো। এখনো পর্যন্ত কোথাও কোন প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যদিও সকাল থেকে আমাদের কাছে অনেক অভিযোগ এসেছিল। তবে আমরা তাদের বলেছিলাম, অপেক্ষা করুন, যদি প্রশ্নফাঁস হয়, আমরা আবার আন্দোলনে নামবো।
পরীক্ষা শেষ হলে ফেসবুকে ভেসে বেড়ানো প্রশ্নের সাথে অরিজিনাল প্রশ্নের কোন মিল পাওয়া যায়নি। যা শিক্ষার্থীদের স্বস্তি দিয়েছে। এটিকে আমি শিক্ষার্থীদের বিজয় বলবো। তারা জাগ্রত হয়েছিলো বলে, কর্তৃপক্ষ স্বচ্ছ পরীক্ষা নিতে বাধ্য হয়েছে ও নিজেরাও সতর্ক হয়েছে।
আমাদের দেশে আন্দোলন ও প্রতিবাদ ছাড়া কোন দাবি আদায় হয়না। তরুণরা যখন আন্দোলন করে সরকার বা কর্তৃপক্ষ সেটিকে গুরুত্বসহকারে দেখে। অন্যথায় সকলক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতি পরিলক্ষিত হয়। আজকে কোথায় দুর্নীতি থেমে নেই। বাংলাদেশের প্রতিটা সেক্টর আজ ঘুষ-দুর্নীতিতে জর্জরিত। আমি মনে করি এই অবস্থা থেকে একমাত্র তরুণরাই দেশকে উদ্ধার করতে পারে। তরুণসমাজকে আরও সতর্ক হতে হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে প্রশ্নফাঁসের বিরুদ্ধে তারা যেমন সোচ্চার হয়েছিল, প্রতিটা অনিয়ম ও দুর্নীতির ক্ষেত্রে তাদেরকে সোচ্চার ও সতর্ক থাকতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, তরুণরা জাগ্রত ও প্রতিবাদী হলে বাংলাদেশের চিত্র বদলে যাবে। জয় হোক তারুণ্যের, জেগে উঠুক তরুণসমাজ।
লেখক: যুগ্ম আহ্বায়ক, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ
পড়ুন: প্রশ্ন ফাঁস হয়নি, প্রশংসায় ভাসছে প্রাথমিক পরিবার