ভোগান্তি কমাতে জাবির ইউনিট কমানো ও বিভাগীয় পর্যায়ে পরীক্ষা হওয়া জরুরি

মো. হোসেন আলী
মো. হোসেন আলী  © ফাইল ফটো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার ১০টি ইউনিটে জাবির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বিষয়টি বেশ উদ্বেগের। কেননা প্রতিটি ইউনিটের জন্য পৃথকভাবে আবেদন করতে হবে। এছাড়া পরীক্ষা দিতে আসতেও হবে আলাদা আলাদা দিনে। এতে ভর্তিচ্ছুরা একদিকে যেমন বিড়ম্বনার শিকার হবেন; অন্যদিকে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন অভিভাবকরা। এজন্য জাবির ভর্তি পরীক্ষা বিভাগীয় পর্যায়ে হওয়া জরুরি।

দীর্ঘদিন ধরে ভর্তি নিয়ে কাজ করছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে বাসওয়ালা, রিকশাওয়ালা, খাবারের দোকানসহ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্তি অর্থ আদায় করে থাকেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের ঢাকায় আসতে গুনতে হয় বাড়তি অর্থ। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না বলেই মনে করছেন লাখ লাখ ভর্তিচ্ছু ও তাদের অভিভাবকরা। এজন্য আগের মতো কম সংখ্যক ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন কেউ কেউ।

শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘব এবং আর্থিক ক্ষতি কমাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কেও এটি অনুসরণ করা জরুরি। কেননা একাধিক ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা হওয়ায় শিক্ষার্থীদের বার বার ঢাকায় আসতে হবে। আবেদনের অর্থ জোগাড় হলেও ঢাকা যাতায়াতের অর্থের অভাবে কারণে অনেকে ভর্তি পরীক্ষায় বসার সুযোগই পাবেন না। এটি এক ধরনের বৈষম্য তৈরি করবে বলেই আমার মনে হয়। বৈষম্যহীন বাংলাদেশে যা শোভা পায় না।

বিভাগীয় পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষা ব্যবস্থা চালুর কারণে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি অনেকাংশে লাঘব হয়েছে। শিক্ষার্থীরা নিজ জেলা কিংবা বিভাগে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারছেন। তাকে বাইরে থাকতে হচ্ছে না। বাইরে খেতেও হচ্ছে না। এতে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে না অভিভাবকদের। সকালে পরীক্ষা দিয়ে দুপুরে কিংবা বিকেলে বাড়িতে চলে যেতে পারছেন তারা। 

আমরা প্রত্যাশা করছি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের ভোগান্তি কমাতে উদ্যোগ নেবে। গরীব, অসহায় শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের স্বার্থে বিভাগীয় পর্যায়ে অথবা ইউনিট সংখ্যা কমিয়ে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করবে জাবি এমনটাই প্রত্যাশা। আশা করছি জাবি কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী বান্ধব সিদ্ধান্ত নেবে।

লেখক: প্রধান সম্পাদক, আসপেক্ট সিরিজ; লেখক কেমিস্ট্রি প্লাস।
ইমেইল: mhalichemist@gmail.com


সর্বশেষ সংবাদ