১৫ নভেম্বর ২০২৪, ২১:৩৮

শিক্ষাজীবনে সাংগঠনিক দক্ষতা অর্জন, ভবিষ্যতের প্রস্ততি

লেখক   © সৌজন্যে প্রাপ্ত

প্রতিযোগিতামূলক এই বিশ্বে ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক উভয় ক্ষেত্রেই সফলতার চাবিকাঠি হতে পারে সাংগঠনিক দক্ষতা। আর এই দক্ষতা অর্জনের কাজগুলো শুরু করা উচিত শিক্ষাজীবনেই। একজন শিক্ষার্থী স্কুল থেকেই বিভিন্ন সহশিক্ষা তথা সংগঠনের সাথে যুক্ত হতে পারে। স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মজবুত করে নিতে পারে সেসকল সাংগঠনিক দক্ষতা। সংগঠনের জন্য করা পরিকল্পনা এবং তা বাস্তবায়নে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা থেকে শুরু হয় এই দক্ষতার অর্জন। আর এই অর্জিত এই দক্ষতার ইতিবাচক প্রভাব দেখা যায় কর্মক্ষেত্র কিংবা ব্যক্তিগত জীবনেও। 

আরও পড়ুন: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো ‘গরিবের বিদ্যালয়ে’ পরিণত হয়েছে

সাংগঠনিক দক্ষতা বলতে এমন এক ধরনের দক্ষতা বোঝায় যার মাধ্যমে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের কাজগুলো পরিকল্পিত, সুসংগঠিত এবং সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারে। বিশদভাবে বললে সময়ের সঠিক ব্যবহার, একাধিক কাজের মধ্যে কোন কাজটিকে প্রাধান্য দিবে তা নির্ধারণ করা, সমস্যার সমাধান করা এবং তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার মানসিকতা তৈরি করা। সাংগঠনিক দক্ষতার মাধ্যমে যে কেউ তার লক্ষ্য অর্জন করতে পারে, কঠিন পরিস্থিতি সামলে নিতে পারে এবং তার জন্য যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়ে যায়। 

সময়ের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা সাংগঠনিক দক্ষতার মূল বিষয়। শিক্ষার্থীর প্রতিদিনের অনেক কাজ থাকে, কিন্তু সময় থাকে সীমিত। সাংগঠনিক দক্ষতার মাধ্যমে শিক্ষার্থী শিখে কোন কাজটি আগে করা উচিত, যার ফলে সে চাপ কমিয়ে সহজেই সফল হতে পারে। 

শিক্ষাজীবন সাংগঠনিক দক্ষতা ও নেতৃত্ব গড়ে তোলার উপযুক্ত সময়, কারণ এ সময়ে নিয়মানুবর্তিতা, দায়িত্বশীলতা, এবং কাজের পরিকল্পনা করার অভ্যাস তৈরি হয়। পরীক্ষার প্রস্তুতি, প্রজেক্ট, দলগত কাজ এবং ক্লাসের চাপ সামলাতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা সাংগঠনিক দক্ষতা চর্চা করে, যা ভবিষ্যতে তাদের সফলতার পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। ছোট ছোট অভ্যাসের মাধ্যমে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা এই দক্ষতা গড়ে তুলতে পারে যা ভবিষ্যতে চাপ সামলানো সহজ করে তোলে। সাংগঠনিক দক্ষতা নেতৃত্বের গুণাবলিও তৈরি করে এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে নেতৃত্ব দেয়ার মনোভাব তৈরি করে।

সময়ের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা সাংগঠনিক দক্ষতার মূল বিষয়। শিক্ষার্থীর প্রতিদিনের অনেক কাজ থাকে, কিন্তু সময় থাকে সীমিত। সাংগঠনিক দক্ষতার মাধ্যমে শিক্ষার্থী শিখে কোন কাজটি আগে করা উচিত, যার ফলে সে চাপ কমিয়ে সহজেই সফল হতে পারে। সঠিক পরিকল্পনা এবং নিয়মিত কাজ করার মাধ্যমে আমরা সময় ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারি, যা আমাদের চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং কাজের মান বাড়িয়ে দেয়।

কোনো কাজ সফলভাবে শেষ করতে হলে, তার লক্ষ্য স্পষ্টভাবে জানা এবং সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করা জরুরি। একটি ভালো পরিকল্পনা আমাদের কাজের মধ্যে ভুল-ভ্রান্তি এড়াতে সাহায্য করে। ভালো পরিকল্পনা শিক্ষার্থীকে কাজের মান বাড়াতে ও চাপ কমাতে সাহায্য করে।

আরও পড়ুন: জিপিএ কখনোই ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে পারেনা

পত্রিকা কিংবা ব্লগে বিভিন্ন সমান ধন্য প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অভিজ্ঞ কর্মকতাদের মতামতেও দেখা যায় তারা সাংগঠনিক দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। একটা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য দলীয় কাজকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয়। নিয়োগের ক্ষেত্রে একাধিক ফ্রেশারের মধ্যে তারা সাংগঠনিকভাবে দক্ষ একজনকেই ওপরের দিকে রাখেন। 

উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশের পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীদের জন্যও সাংগঠনিক এই দক্ষতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সেসকল কর্মকর্তাদের মতো স্কলারশিপেও সাংগঠনিক দক্ষতা থাকলে তাদের প্রাধান্য থাকে যার একাধিক উদাহরণ আমাদের সামনে আছে। 

পড়াশোনাকে বাদ দিয়েও আবার সাংগঠনিক দক্ষতা অর্জনে বেশি ঝুঁকে পড়লে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যে শিক্ষার্থী একইসাথে সকল দিক সামলাতে পারছেন, পছন্দ বা বাছাইয়ের কাতারে তিনিই শীর্ষে থাকবেন। সহশিক্ষা হিসেবে তাই সাংগঠনিক দক্ষতা অর্জন বিশ্বায়নের যুগে অত্যাবশ্যক। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোরও শিক্ষার্থীদের জন্য এ ধরনের সুযোগ আরও প্রসারিত করতে হবে। 

লেখক: শিক্ষার্থী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ।