বাংলাদেশের সংগ্রামী ছাত্রছাত্রীদের ৩টা পরামর্শ দিতে চাই

বাংলাদেশের সংগ্রামী ছাত্রছাত্রীদের আমি ৩টা পরামর্শ দিতে চাই
বাংলাদেশের সংগ্রামী ছাত্রছাত্রীদের আমি ৩টা পরামর্শ দিতে চাই  © সংগৃহীত

বাংলাদেশের সংগ্রামী ছাত্রছাত্রীদের আমি ৩টা পরামর্শ দিতে চাই

১. আপনাদের উচিত ইমিডিয়েটলি রাজনৈতিক দল খোলা। আপনারা যা অর্জন করেছেন - তা তুলনারহিত। কিন্তু এই অর্জন নষ্ট হয়ে যাবে যদি না আপনারা সরাসরি রাজনীতিতে পার্টিসিপেট করেন। মনে রাখবেন - আপনাদের দল এলেকশান শুরুই করবে ১৫-২০% ভোট সাথে নিয়ে। যেইসব টুঙ্গি আওয়ামী লীগকে ভোট দিতো (মদ্যপ আওয়ামী/আরাফাত টাইপ) - এরা বিএনপিকে ভোট দিবে না। আপনাদের দিবে।

২. কোনো নাম নিতে চাই না বাট আপনারা দল খুললে সম্ভবত লেফট-লীনিং আইডিয়োলজির দিকে ঝুঁকবেন। ওরকম লোকরাই আপনাদের অ্যাডভাইজার হবে। আপনাদের মনে হবে যে এসব প্রোগ্রাম ও ন্যারেটিভই সঠিক। আপনাদের বয়সে থাকলে আমিও তাই করতাম। এইটা যে ব্লেইট্যান্ট মিস্টেক ছিলো - এটা বুঝতে আপনাদের ২০ বছর লাগবে। কমিউনিজম এবং সোশালিজম জনিত কর্মধারা যে পরিবার ও মহল্লার বাইরে কাজ করে না - এটা বুঝতে অনেকের ২৮ বছর লাগে। কিন্তু বাংলাদেশে অনেকের ৭৮ বছর লাগে - যা মূলত দুঃখজনক।

৩. দল ফর্মেশন করলে আপনাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল যে আপনাদের দলের লিডারশিপ রোলে কে যাবে? কনভেনশনাল উইজডোম বলে যে আপনাদের চাকরি/কাজ চালানোর অভিজ্ঞতা নাই তাই আপনাদের সিনিয়রদের নেয়া উচিত। এটা সত্য যে বড় প্রতিষ্ঠান চালানোর মতো অভিজ্ঞতা আপনাদের নাই। কিন্তু আমাদের জেনারেশনের মানুষদের নিলে এইটা জাস্ট আরেকটা পলিটিক্যাল পার্টি হয়ে যাবে।  আমি বলবো যে লিডারশিপ রোলে আপনারাই থাকেন এবং লেগে থাকেন। হয়ত নেক্সট এলেকশানে পারবেন না কিন্তু এই যে লেগে থাকা - এইটাই সবচেয়ে জরুরি।

এক মাসের মধ্যে আপনাদের হৃদয় খান খান হয়ে যাবে। এই জাতির মানুষ fickle. তারা শহীদদের ভুলে যাবে, এই গণহত্যার বিচার ভুলে যাবে। ফ্যাসিজম এবং মিথ্যাকে তারা দুই সপ্তাহের মধ্যে পয়েন্ট অফ ভিউ বলে মনে করা শুরু করবে। 

তারা মনে রাখবে কার ভ্রূ কেমন? এই যে কোনো কিছুর এসেন্সে যাওয়া - সেটা এই জাতির মানুষের পক্ষে সম্ভব না। এটা যখন আপনারা সত্যিকারভাবে বোঝা শুরু করবেন - হৃদয় ভেঙে খান খান হয়ে যাবে। এই হতাশাকে মোকাবেলা করার জন্য আপনাদের একতাবদ্ধ হয়ে রাজনীতি করা উচিত। তাছাড়া আপনারা একাট্টা হলে এর প্রতিক্রিয়ার বিএনপি-জামাতের মান্ধাত্বা আমলের রাজনীতি বদলাতে পারে - যা মোটের ওপর এই দেশের জন্য ভালোই হবে।

রাজনীতি কোনো সেক্সি কাজ না। অসম্ভব বোরিং, অসম্ভব ক্লান্তিকর, অসম্ভব thankless জব। যদি আপনারা শেখের পট্টি না বানিয়ে সৎভাবে রাজনীতি করেন আর কি। কিন্তু আমি দেখেছি যেই রেস্পেক্ট, যেই ভালোবাসা একজন সৎ রাজনীতিবিদ এই দেশে পান - কোনো ফিল্মস্টারও সেটা পায় না। এর মূল্য আছে। ২৫ বছর বয়সে না হলেও ৬৫ বছর বয়সে এর মূল্য আছে। শুধুমাত্র রাজনীতির মাধ্যমেই অনেক মানুষের জীবনে দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তন আনা যায়।

পার্টিসিপেট করুন। আল্লাহপাক আপনাদের চলার পথ সহজ করে দিন।

(দলের নামে আল্লাহর ওয়াস্তে "ছাত্র" শব্দটা রেখেন না )

লেখক: উদ্যোক্তা গবেষক ও লেখক।


সর্বশেষ সংবাদ